সমান্তরাল
রাখী নাথ কর্মকার
ঝিরঝিরিয়ে অবিশ্রান্ত তুষার ঝরেই
চলেছে বদ্ধ কাঁচের
জানালার ওপারে ।ধূসর মেঘচাঁদোয়ায়
ঢাকা গোমড়া আকাশটার ঠিক নীচেই, যেদিকেই
চোখ যায় -শুধুই ধু ধু ,পরিচ্ছন্ন,নির্মল শ্বেতশুভ্র বরফের আস্তরণ !দূরের মাঠটার বুকে কে
যেন দিগন্তদূর, সাদা পেলব ক্রীমের প্রলেপ বুলিয়ে দিয়ে গেছে । ন্যাড়া গাছেদের শুষ্ক
প্রেতমূর্তিগুলি তাদের শিরা ওঠা কেঠো কেঠোহাতগুলি বার করে নির্বিবাদে বরফবৃষ্টিতে
ভিজেই চলেছে ।
গরম
ধোঁয়া ওঠা কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে
উদ্বিগ্ন স্বরে দিয়া প্রশ্ন করল -"
এই অবস্থায় অফিস যেতে পারবে?"
--"কেন,কলকাতায় কি হাঁটু জলে গাড়ি ঠেলে অফিস করি নি? এখানে না হয় বরফ ঠেলেই...অবশ্য অফিসটা এক মাইলের মধ্যে
বলেই সেটা সম্ভব,নয়তো--!গতকাল থেকে নিউ
ইয়র্ক ,মিশিগান,বাফেলোর ওদিকে গাড়ি চালানোর ওপর সতর্কতা জারি করে দেওয়া হয়েছে। নিউ ইয়র্কের দশটি কাউন্টিতে তো
জরুরী অবস্থাই জারি হয়ে গেছে !জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সাহায্যে বরফ সরিয়ে
পরিস্থিতিকে বশে আনার চেষ্টাও করা হচ্ছে ।"কফির মাগটা টেবিলের ওপর রেখে দিয়ে অসহিষ্ণু ভাবে উত্তর দিল অতীশ। টাওয়েলটা কাঁধে ফেলে হন্তদন্ত
হয়ে ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে ও বলে গেল--" আমার খাবারটা একটু তাড়াতাড়ি
রেডি করে দাও তো দেখি , বেরিয়েই
তো আবার গাড়ির ওপর জমে থাকা বরফের চাঁই সাফ করতে করতেই পনেরো মিনিট লেগে যাবে
!"
স্যান্ডউইচ
আর স্যুপটা মাইক্রোওভেনে ঢুকিয়ে দিয়ে স্যালাড কুচোতে কুচোতে বাইরের দিকে তাকায়
দিয়া ।ইতিমধ্যেই
একটি 'স্নো-প্লাউ' ধীরে
ধীরে বরফের সাদা ত্বক কেটে কেটে কালো
রাস্তাটার ঠিকানা খুঁজতে বেরিয়ে পড়েছে, সেইসঙ্গে ভারী নুনের ঝুরঝুরে গুঁড়িতে ভরিয়ে দিতে শুরু
করেছে খোসা ছাড়ানো কালচে চকচকে রাস্তাটার
পিচ্ছিল বিস্তৃতিটুকুতে । বাইরে হঠাৎ হঠাৎই বিশাল দমকা হাওয়ায় মাঠের ওপর ঝুরো বরফের রাশি ডানা মেলছে
অক্লেশে । তুষার
ঝড় !গত কাল থেকেই এই দুর্যোগ-- ফোরকাস্টে
অবশ্য গতকালই শুনেছিল দিয়া, পোলার ভর্টেক্সের
দক্ষিণমুখী অপসরণের কারনেই এই
তুষার ঝঞ্ঝা । সুমেরু
থেকে ঠান্ডা পোলার এয়ার প্রবেশ করায়
রেকর্ড শীত পড়েছে মার্কিন মুলুকে ।পশ্চিম নিউ ইয়র্কে ঘন্টায় প্রায় পাঁচ ইঞ্চি পুরু হয়ে তুষার পড়ছে । শিকাগোতে নাকি -৩০সেন্টিগ্রেড
নেমে গেছে তাপমাত্রা । ওদের এখানে, মেরিল্যান্ডে অতটা না হলেও
মোটামুটি - ১৫ সেন্টিগ্রেড তো হবেই ।দুপুরের মধ্যেই প্রায় ৬ইঞ্চির ওপর
বরফ জমে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে ।কি যেন নাম দিয়েছে তুষার ঝড়টার ? ও হ্যাঁ - 'লিয়ন'। এই তো
গত সপ্তাহেই আর একটা উইন্টার স্টর্ম হয়ে গেল --'জেনাস' ।ডিসেম্বর থেকেই একের পর এক তুষার ঝড় হয়েই চলেছে এখানে আর তেমনি হাড়জমানো
ঠাণ্ডা । কত যে ফ্লাইট ক্যান্সেল হয়েছে এর জন্যে তার ইয়ত্তা নেই ।এখনো বেশ কয়েকদিন ধরে চলবে এই দুর্যোগ
।গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর এফেক্ট !
ল্যাপ্টপটা খুলে রুষার স্কুলের ওয়েবসাইটটা চেক করে নিল দিয়া । গতকাল এই জাঁকালো শীত আর
ঝোড়ো আবহাওয়ার জন্য রুষাদের স্কুল অফ ছিল । নাহ ,আজ স্কুল হবে, তবে ২ ঘন্টা ডিলে করে
স্কুলবাস আসবে ।
কোনমতে
স্নান সেরে গায়ে সোয়েটার, জার্কিন
চাপাতে চাপাতে বিড় বিড় করতে থাকে অতীশ -'উফফ , কবে যে এই ঠান্ডাটা কমবে !' দিয়ার অবশ্য বরফের মরুভূমিতে, এই চূড়ান্ত প্রতিকূলতার মাঝে কখনোসখনো হঠাৎ পাগলামি করতে মন্দ লাগে না । বারান্দা জুড়ে ডাঁই হয়ে থাকা
বরফের তাল থেকে রুষার জন্য রঙচঙে স্নোম্যানের বিস্ময় কুড়োতে গিয়ে কেমন একটা অদ্ভুত
শিশুসুলভ আনন্দ, রোমাঞ্চ খুঁজে পায় ও ।আসলে বয়সের সাথে সাথে
পারিপার্শ্বিক দুনিয়াটা বদলে যায় হয়ত, কিন্তু যা বদলায় না তা হল বুকের
ভেতর চোরাস্রোতের মত তিরতিরিয়ে বয়ে চলা ছেলেমানুষি আনন্দের সুখানিভূতিটুকু ।মেঘলা বরফের দুপুরটুকু পার করে
রুষার হলুদ স্কুলবাসটা রাস্তার মোড়ে যেখানে ওকে এসে নামিয়ে দিয়ে যায়, সেখান থেকে ওদের রান্নাঘরের জানালাটা স্পষ্ট দেখা যায়। ওপরের ফ্ল্যাটের কৌশিকীদির মেয়ের
সঙ্গে বার্চ অ্যালি ধরে হাঁটতে হাঁটতে রুষা যখন এলিমেন্টারি স্কুল থেকে ফেরে, রান্নাঘরের জানালায় রুষার প্রিয় 'ম্যাক এন্ড চিজ' পাস্তা তৈরী করতে করতে দিয়া তখন গল্পসাগরে ডুব দেয় কৌশিকীদির সঙ্গে ।
এ বছর,এই প্রথম বরফের রাজত্ব কাকে বলে তার সঙ্গে পরিচিত হল
দিয়া ।ফার্স্ট
ওয়ার্ল্ড কান্ট্রি বলেই হয়ত....সাজানোগোছানো, ডিসিপ্লিন্ড এক শহরতলিতে,একটি
বছরের ব্যাপ্তিতে, একটি নবীন ফুলেল বসন্ত, জমজমাট গ্রীষ্ম , আর
অগ্নিবর্ষী ফল কালারের অর্বাচীন মাদকতার পর এই বরফ সাম্রাজ্যের অভিনব মোহময়তা..দিয়াদের গতানুগতিক
দিনে নতুন রং চাপিয়েছে। গত বসন্তে যখন ম্যাগ্নোলিয়া, ফরসাইথিয়া , চেরিফুলের প্রাচুর্য্যে
রঙ্গিন এ দেশ মেতে উঠেছে হোলি খেলায় , তিন বছরের প্রজেক্ট হাতে নিয়ে ওরা পা রেখেছিল এখানে , ভিসাও তিন বছরের, যদিও মেয়াদ বাড়লে সবচেয়ে খুশী হবে রুষা, অতীশও তার ব্যাতিক্রম নয় ! হোম ওয়ার্কের কড়াকড়ি নেই একদমই, শৈশবটা এখানে প্রকৃতির খোলা খাতার মতই চাপহীন, চিন্তাহীন, ভাবনাহীন । আর যৌবন
? সেও জীবনের রস শুষে নিতে ব্যস্ত
প্রতিটি দিনের ব্যস্ততার শেষে !দিয়া কিন্তু পাকাপাকিভাবে এখানে থেকে যাওয়ার কথা
কল্পনাই করে না, শুধু একটা কথাই ওর মনে
হয়-"জীবনের শেষটুকু এখানে বড় কষ্টের ।" অতীশ প্রতিবাদ করে -
"কেন, আমাদের দেশেও কি সবসময়ে সবাইকে পাশে পাওয়া যায়? আমারই অবিবাহিত
মামাতো বড় দিদির শেষ সময়ে কাজের মেয়েটাও
পাশে ছিল না !"
অতীশ
তর্ক করতে ছাড়ে না ।দিয়া জানে ,অতীশ পিছুটানহীন , মাবাবা অনেক আগেই গত হয়েছেন, থাকার মধ্যে একটি মাত্র দিদি, সেও বিয়ের পর থেকেই স্বামীর কর্মসূত্রে মুম্বাই এ সেটলড ।সেখানে দিয়া একমাত্র মেয়ে,বাবা মারা গেছেন বিয়ের পরে পরেই। কোলকাতার ফ্লাটে মায়ের একাকী
দিনযাপন , মাকে ফেলে এখানে আসার আগে নিজেকে
বহুবার ভেঙ্গেচুরে তবে একটা সাময়িক, নড়বড়ে
সিদ্ধান্তে আসতে হয়েছিল ।অতীশের চিন্তাধারার সঙ্গে সবসময় যে ওরটা মেলে তা নয়, তবে কথায় কথা বাড়ে তা ও বিলক্ষণ জানে ।
--"দিয়া, এখন আর বাইরে আস্তে হবে না তোমায়, প্রচন্ড ঠান্ডা ! বরঞ্চ রুষাকে ঘুম থেকে তুলে দাও, ওকে স্কুলের জন্য রেডি হতে হবে তো ।" গাড়ির বরফ চাদর সরিয়ে ফেলে
গাড়িতে স্টার্ট দিতে দিতে অতীশ বলে ওঠে । দিয়া দরজার কাছে এসে দাঁড়ায় । দিকবিদিক এক করে দেওয়া কনকনে বরফগুঁড়োর আনন্দ উড়ান ও প্রাবল্যে ঝাপসা
রাস্তার মোড়ে অতীশের গাড়িটা মিলিয়ে যেতেই হঠাৎ ওর চোখে পড়ে ওদের আপার্টমেন্টের গা
লাগোয়া জ্যাসন হ্যারিসের বাড়ির সামনে পুলিশের গাড়ি !!দেখে একটু অবাকই হয় ও , আপার্টমেন্টের দক্ষিণপ্রান্তের পাঁচিল ধরে অনেকগুলি ওনারশিপ বাড়ি...তার
মধ্যে প্রথমটিই মি হ্যারিসের । দিয়ার মার থেকেও বোধহয় বছর পনেরোর বড় বিপত্নীক ভদ্রলোক একাই থাকেন ঐ
ব্রাউন বাড়িটায়, বাড়ির বুড়ো ব্রাউন ওক গাছটার
সামনের গ্যারাজেই দাঁড়িয়ে থাকে তার ব্রাউন পুরোনো ফোর্ডগাড়িটা । পোষা কুকুর কার্লের সঙ্গে
সপ্তাহের মার্কেটিং সেরে বৃদ্ধ যখন নেমে আসেন গাড়ি থেকে ,ঠুকঠুক লাঠি হাতে নিরলস চেষ্টায় বাজারের ব্যাগদুটি টানতে টানতে ধুঁকতে
ধুঁকতে এগিয়ে যান দরজার দিকে !অনভ্যস্ত চোখে
দিয়া একদিন প্রশ্ন করেই
বসেছিল-"মে আই হেল্প ইউ?" ঘোলাটে চোখে তাকিয়েছিল বৃদ্ধ -"থ্যাঙ্ক
ইউ ডিয়ার, বাট আই ক্যান ম্যানেজ ।" তারপরই বোধহয়
আপার্টমেন্টের পাঁচিলের দিকে বলের পিছনে দৌড়ে যাওয়া রুষার দিকে ইঙ্গিত করে ভদ্রলোক বলেছিল -"ডোন্ট লেট হার গো দেয়ার, বি কেয়ারফুল অফ দ্য পয়সনাস আইভি বুশেশ..."কৌশিকীদির কাছ থেকেই শুনেছিল দিয়া , হ্যারিসের দুই ছেলেই বাইরে থাকে, দু/তিন বছরে একবার আসে কি তাও আসে না !
যখন
শরতের নরম , প্রফুল্ল বিকেলে হ্যারিসের বাড়ির
কোণার দিকের আপেলগাছটার নিঝুম তল জুড়ে শুয়ে থাকে ঝরে পড়া লাল আপেলের বিলাসিতা ,বাগানের হুমদো ,ফুলো ফুলো কাঠবেড়ালিগুলিই খালি সেই অনাস্বাদিত আপেলশয্যায় দাপিয়ে বেড়ায়
!সাহচর্যের অভাবে নিরলস অপেক্ষা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ব্রাউন বাড়িটা !লাল হিমেল শীতের বরফঢাকা লন সাফ করতে বৃদ্ধ যখন তার
ঝুঁকে পড়া টলমলে শরীরে, অশক্ত
হাতেই বেলচা নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন ...দিয়া অবাক হয়ে আড়চোখে চায় , পরিবেশ মানুষকে কতটা আত্মনির্ভর করতে পারে ,তা এখানে না এলে ওর অজানাই রয়ে যেত । দিয়ার মনের কথা কুড়িয়ে নিয়েই
অতীশ ওকে সাবধান করে দেয় -"খবর্দার, কিছু
খাবার-দাবার যেন আবার বানিয়ে দিতে
যেও না ! এখানে এসব কিন্তু একেবারেই চলে না!" দিয়া মনক্ষুণ্ণ হয়, কলকাতায় তো পাশের ফ্ল্যাটের বাবুলটা অফিস থেকে ট্যুরে
গেলে কতবার কাকু,কাকীমাকে নানা ডিশ তৈরী
করে খাইয়েছে ও ! এখানে কি মানুষের আন্তরিকতাটুকুও বদলে যায়?
--"চারদিন
ধরে ডেডবডিটা পড়ে ছিল ,কাল থেকে
ছোটো ছেলেটা ফোন করে করে না পেয়ে শেষে ৯১১ এ কল করে--" কৌশিকীদির গলা শুনে
চমকে ঘুরে তাকায় দিয়া ! কখন যে ওপর থেকে কৌশিকীদি নীচে সিঁড়ির কাছে নেমে এসেছেন সে খেয়ালই করে নি ও । ঘটনার আকস্মিকতায় কোন প্রশ্নই করতে পারে না দিয়া । কৌশিকীদিই নিজে থেকে নিস্তব্ধতা
ভাঙেন--" কার্ল ও খাটের পাশেই পড়েছিল । হয়ত ৩/৪দিন ধরে কিছু খেতে না পেয়ে..."
ঘরের
ভেতর থেকে স্কাইপের পরিচিত রিং টোন শুনে ছুটে ঘরে ঢোকে দিয়া ।এই সময়টা মা রোজ একবার করে সুদূর
দ্বীপান্তরে মেয়ের পরিপাটি ঘরগেরস্থালিকে দুচোখ দিয়ে ছুঁয়ে যান ।রুষা আর অতীশ বেরিয়ে গেলে মা
মেয়ের খানিক একান্ত অবসর ।মা ওদিকে ডিনারের তোড়জোড় করেন আর দিয়া ব্রেকফাস্ট গুছিয়ে নিয়ে বসে ।
কিন্তু আজ স্কাইপের ওপারে অনেকগুলি কেমন যেন
ছায়া-ছায়া ছবি ঘরময় ঘুরে বেড়াচ্ছে অস্থিরভাবে । দিয়া উদ্বেল হয়ে ওঠে , ক্যামেরার কাছে এগিয়ে আসে পাশের ফ্ল্যাটের গুপ্তকাকুর
চেহারা ।
"দিয়া, আজ সকাল থেকেই তোমার মায়ের শরীরটা
খারাপ, বেশ কয়েকবার ফোন করার চেষ্টা
করেছিলাম আমরা, কিন্তু পাচ্ছিলাম না ।"
-"ওহো, তুষার ঝড়ের জন্য এখানে সকালবেলা ঘন্টাখানেক নেট কানেকশন,পাওয়ার --কিছুই ছিল না, কিন্তু মায়ের কী হয়েছে, গুপ্তকাকু
?"
-"তুমি
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একবার ফেরার চেষ্টা কর ,দিয়া । বৌদির
একটা স্ট্রোক হয়েছিল , সকালেই মাথা ঘুরে...নেহাত
তোমাদের ঠিকে কাজের মেয়েটা তখন উপস্থিত
ছিল, সেই দৌড়ে এসে আমাদের খবর দেয় । অ্যাপোলোতে ভর্তি আছেন । "
গুপ্তকাকুর
কথাগুলো কেমন যেন ইকো হতে থাকে দিয়ার মনের মধ্যে ।পিছনে পায়ের শব্দে ও টের পায়, ওর পিছন পিছর কখন কৌশিকীদিও ঘরে এসে ঢুকেছেন ।ঝড়ের দাপটে হঠাতই হাট হয়ে খুলে
যাওয়া দরজা দিয়ে উন্মত্তভাবে ঘরে আছড়ে পড়ে হু হু কানফাটানো হাওয়ার উত্তাল ঢেউ, লাগাতার ঝঞ্ঝাভাসের তীব্র ভ্রূকুটি !বরফের শীতার্ত আদর
ছড়িয়ে পড়ে কার্পেটের জমা ধুলোয় মিশে থাকা স্মৃতিগুলোর আনাচেকানাচে ।
হঠাৎই
গলার কাছে একদলা বাষ্প উঠে আসে দিয়ার !হৃৎপিন্ড জুড়ে সচল হওয়া একটা তিরতিরে কম্পন
বিদ্যুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে ওর সারা শরীরে । কেমন যেন একটা বিচিত্র শূণ্যতার গভীরে ডুবে যেতে যেতে দরজার ফালি দিয়ে
আবছায়া চেয়ে দেখে দিয়া-হ্যারিসের বাড়ির সামনে থেকে বরফ সরিয়ে পুলিশের গাড়িটা
বেরিয়ে যায় । সীল হয়ে
যাওয়া বুড়ো ব্রাউন বাড়িটা ধারালো হিমেল হাওয়ার তীক্ষ্ণ চাবুক খেতে খেতে একাকী
দাঁড়িয়ে থাকে বরফের নিরুদ্যম,ভারী
স্তরের নীচে জমে থাকা আশেপাশের প্রতিবেশী বাড়িগুলির মাঝে --মালিকহীন, নির্বান্ধব , নির্জন !
মন্তব্যসমূহ