এন্টিফিকশন ।। শিমুল মাহমুদ ।। মানুষ হিসেবে আমি কতটা স্বার্থপর ।।

                 এন্টিফিকশন
                    শিমুল মাহমুদ
                    মানুষ হিসেবে আমি কতটা স্বার্থপর
                      প্রথম কিস্তি

          সিরাজগঞ্জ বি.এল. স্কুলের টানা দালান-বারান্দার নিচে যখন আমি হাঁটছি তখন নারী বিষয়ক প্রবন্ধটি নিয়ে ভাবছি আর তখন প্রবন্ধ লিখতে গিয়ে পক্ষান্তরে আমার আলমডাঙায় ফেলে আসা প্রাইমারি স্কুলের জীবন, পেঙ্গাকে আশ্রয় করে আমার গোপন শ্বাস গ্রহণ আমার ভেতরে এক ধরনের কষ্ট তৈরি করতে শুরু করেছে তখন আমার মামাতো বোনের লেখা গল্প পড়ে আমি বি.এল. স্কুলের মাঠে বসে কেঁদেছিলাম গল্পের প্রধান চরিত্র স্কুল থেকে ফেরার পথে রোড এক্সিডেন্টে মারা গিয়েছে অথচ তখন আমার পেঙ্গার কথা মনে হল মনে হল গল্পের ভেতরটা ঠিকঠাক তো উঠে আসেনি আমি গল্প লেখার কথা ভাবলেও আমি প্রবন্ধের কাজ শেষ করার জন্য তাড়িত হলাম এবং শেষ পর্যন্ত রওশন ভাইয়ের পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধটি আমাদের বি.এল. স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক পাঠ করলেন দুজন স্যার আমাকে তিরস্কার করলেন কারণ নারীদের অবস্থান, যৌন জীবন বিবাহিত জীবনের গুটিকয়েক সত্যভাষ্য তুলে ধরার বিষয়টি তাঁরা ঠিক আমার তো এই বয়সে শোভন বলে মেনে নিতে পারেননি শিক্ষক দুজনের একজন স্কুলে যাওয়ার সময় অথবা বাইরে কাজে যাবার সময় নিজের স্ত্রীকে ঘরে তালা দিয়ে যেতেন যাই হোক আমার হাই স্কুলের শিক্ষকদের তিরস্কার আমাকে লেখালেখির ক্ষেত্রে আরও অনুসন্ধানী করে তোলে -সময়ে ডি. সি. সাহেব সিরাজগঞ্জ শহরের হাড্ডিপাড়া অর্থাৎ যৌনকর্মীদের পাড়াটিকে উচ্ছেদ করে দেন বারোয়ারি রমণীবৃন্দ যমুনা নদীর তীরে গিয়ে অস্থায়ী ব্যবসা ছাউনি গড়ে তোলেন আমি আমার নারী বিষয়ক নিবন্ধটিকে কিছুটা প্রতিবেদনধর্মী করে তোলার জন্য রওশন ভাইসহ তিন চার দিন সেই ভাসমান নারীপল্লীতে যাই সংগ্রহ করি খরিদ্দারদের বিচিত্র আচার আচরণ মনন জগতের রহস্যমুখর সংলাপ সেইসাথে সংগ্রহ করি দেহজীবী রমণীদের জীবনকথা সেই অভিজ্ঞতাকে আজও আমি গল্পে নিয়ে আসতে পারিনি আনতে না-পারার কারণ দেহ ব্যবসায়ীদের পল্লী নিয়ে -যাবৎ অনেকেই লিখেছেন আমি চাচ্ছি যা লেখা হয়ে ওঠেনি সেই অনুন্মোচিত বিষয়টিকে গল্পে ধারণ করতে এখনও সেই জগৎটিকে উন্মোচন করতে সক্ষম হইনি আমি; অপেক্ষায় আছি

          লেখকের কলমে থাকে পরিশীলিত নান্দনিক জগত তৈরি জাদুকরী তাবিজ; যা পাঠককে ইমোশনালি ব্ল্যাক মেইল করতে সক্ষম রহস্যমুখর তৈরিকৃত দৃশ্যকল্প; যেখানে লেখক নিজেই মুখোশধারি ঈশ্বর; অথচ পক্ষান্তরে তিনি নিজেকে উপস্থাপন করেন সাধু, যেন বা নিরপেক্ষ নিরাপদ বিবেক; তৈরি হয় স্টোরি নভেল ফিকশন; যা আমাদেরকে লেখকের সত্যিকার চেহারা থেকে দূরে সরিয়ে অনুভব প্রশান্তির ভেতর ঠেলে দেয় পাঠককে শিল্পের বিভ্রমের ভেতর এই ঠেলে দেবার শক্তি আমি এখনও রপ্ত করতে পারি নাই; ফলে আমাকে দিয়ে স্টোরি নভেল অথবা ফিকশন লেখা সম্ভব নয় আমি বাধ্য হয়েছি এর বিপরীতে সরাসরি নিজের চেহারাটিকে টেনে বাইরে এনে প্রকাশ করতে; যদিও বা সেই সাহস আমার কতটুকু আছে, সে বিষয়টিও প্রশ্ন সাপেক্ষ; যেমন ধরুন আপনাকে মনে মনে আমি চাবকাচ্ছি অথচ মুখে সৌম্য হাসি টেনে রেখে নিজেকে উপস্থাপন করছি সভ্য হিসেবে; হয়তো বা আপনাকে মা বলে ডাকছি অথচ ভেতরে জেগে উঠতে শুরু করেছে কাম সমাজশাসিত রুচি নীতি শিক্ষা যে অনুভবগুলোকে আমরা সভ্য মানুষের সূচকচিহ্ন হিসেবে মানছি, সেই সমাজতাড়িত বোধ থেকে আমি যখন নভেল লিখছি তখন আমি নিজেকে গোপন করছি কৌশলে; আমার ভেতরের কামভাব আড়াল করে কাহিনিতে  মায়ের সামাজিক আচরণ বিশ্বাসযোগ্য করে তুলছি সুতরাং আড়াল; কেননা আমরা সভ্য হয়ে ওঠার প্রতিযোগিতায় নেমেছি; পক্ষান্তরে ক্রমাগত মিথ্যার মুখোশে বিভ্রম ফুটিয়ে তুলছি লেখায় স্টোরি নভেল কবিতা অথবা ফিকশন এক ভয়ানক ফ্যান্টাসির জগত, বিভ্রমের জগত, রূপ উপভোগের জগত, যেন বা স্বপ্নে কাঙ্ক্ষিত রমণীর সাথে রতিক্রিয়ার জগত আমি দেখতে চাই, শিল্পের বিভ্রমকে পাশ কাটিয়ে সরাসরি নিজের চেহারাটাকে তুলে ধরা সম্ভব কিনা আমার ধারণা স্টোরি নভেল কবিতা অথবা ফিকশন এর কাঠামোতে এটি সম্ভব নয় কেননা এগুলোর মূল চালিকা শক্তি, শিল্পের নান্দনিক বিভ্রম আমি বিভ্রম থেকে বাইরে এসে বলতে চাইছি এন্টি-ফিকশন, এমন একটা কাঠামোর ভেতর অভিজ্ঞতার অনুভব গেঁথে গেঁথে এমন একটা কিছু লিখতে যেখানে মানবজীবনের ধারাবাহিকতা থাকা সম্ভব নয় আসলে অভিজ্ঞতা তো ধারাবাহিক কোন অর্জন নয় আর জীবন তো আমার একার নয়, আপনার তার সকলের; আদিম বর্বর আর এই সময়ের; পূর্ব পশ্চিম উত্তর অথবা দক্ষিণের ফলে ধারাবাহিকতা সেটাও এক ধরনের বিভ্রম; যা থাকে গল্পে অথবা উপন্যাসে অথচ জান্তব জীবনে তা সম্ভব নয় আর পক্ষান্তরে আমরা তো সবাই নিজেকেই লিখছি আমি অর্থ প্রত্নঅভিজ্ঞতা, জলজ-অভিজ্ঞতা, আদিম বর্বর জীবন থেকে ক্রমাগত সভ্য হয়ে ওঠার যাবতীয় সংকট এই সংকটের প্রশ্নে নিজের ভেতরে কে কতখানি অপরকে বুঝে উঠতে পারছি; প্রশ্নটা সেখানে
            মানবজীবন অর্থ, মানবিক বাস্তবতা আমরা যা দেখি অথবা অনুভবে পেয়ে যাই, তা- মানবিক হতে পারে হত্যাকর্ম এই যে রক্তপাত, কষ্ট, দুঃখ অথবা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাস্রোত এই সব কিছুই তো আমাদের অভিজ্ঞতার অংশ প্রকৃত বাস্তবতায় এই অভিজ্ঞতাও মানবিক -অর্থে অমানবিক বলে আদতে কিছু নেই; সবই জান্তব জীবন মাত্র এই জান্তব জীবন, অজস্র নীতিবোধ আদর্শ আর ধর্মবিশ্বাস অপেক্ষাও জটিল এবং ভয়ানক কুৎসিত এই জান্তব জীবনের ভেতর আমরা আমাদের ছেড়ে দিয়েছি এই যে ছেড়ে দেওয়া এটা আসলে জীবনের দিকেই অংশ গ্রহণ জন্ম মাত্রই এই অংশ গ্রহণ অনিবার্য এই অনিবার্য অংশ গ্রহণের ভাষিক রূপান্তরই গল্প হতে পারে একটা রাক্ষসের গল্প রাক্ষসটা আসলে আমি অথবা আপনি অথবা জীব জগতের অপর কেউ; যা আমাদের জান্তব অভিজ্ঞতার অংশ

আমরা আদতে কিছুই কল্পনা করতে পারি না আমরা আমাদের সমগ্র জীবনের, গোটা একটা মানব জীবনের, হতে পারে তা প্রত্ন-অভিজ্ঞতা আশ্রিত জীবন; এমনতর একটা জীব-জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতার রূপায়নের অভিধাই আমরা কল্পনা করতে পারি মাত্র; যা আসলে কল্পনা নয়, বাস্তব এই বাস্তবতার বাইরে অন্য কিছু আমরা ভাবতে পারি না -অর্থে কল্পনা অর্থ বাস্তব-জীবন-আশ্রিত তথা বস্তু-আশ্রিত ভাষিক অথবা চিন্তক রূপ মাত্র কল্পনা বলে আসলে কিছু নেই যাকে আমরা কল্পনা বলি; আসলে তা বাস্তবতার রূপক উপস্থাপন জটিল অভিজ্ঞতা প্রকাশের জন্য আমরা এমনতর ভাষিক রূপক প্রকাশ করতে বাধ্য এই যে কুলদা রায় বললেন, নবারুণ দা চলে গেলেন তাকে নিয়ে লিখুন এই দাবিটুকু আসলে জীবনের জৈব-রূপক; বহুমাত্রিক এই চলে যাওয়া এক ধরনের রহস্য; আমরা রহস্য ভালোবাসি, যেন বা মাতামহীর চুলের সুতোয় ফুটে আছে সময় শূন্যতায় ফেটে পড়ছে বীজ পরিযায়ী পাখির পাখা বহন করে নিয়ে যাচ্ছে শস্য-অঙ্কুর মাখনের তো, রাত জেগে আছে মধ্য আকাশে দুধবোন আকাশ, মৃত্যুর বিপরীত তাবিজ এই সব রূপক-জীবনের ভেতর বিরামহীন জীবনকে সাথে নিয়ে নবারুণ ভট্টাচার্য মরে গেলেন গল্প বলতে আমি -রকম রূপক-আশ্রিত অথচ জান্তব বাস্তবতাকে বুঝি জান্তব বাস্তবতার ভেতর দেখতে পাই, শঙ্খনদীর তীরে জোছনাদের পোষমানা ঘোড়া সবুজ ঘাসের প্রাণ থেকে খুটে খাচ্ছে আমাদের ফেলে আসা সময় এই খুটে খাওয়া সময়ের ভেতর তাকিয়ে দেখি আমার প্রথম লেখা, নারী বিষয়ক একখানা প্রবন্ধ অবশ্য এর আগে অথবা পরে লিখেছিলাম ছড়া জাতীয় একটা কিছু; তখন আমি চার অথবা পাঁচ ক্লাসে পড়ি শিরোনাম দিয়েছিলামস্যান্ডেল ‘‘স্যান্ডেল কহে দুঃখ করে/ কতদিন আর রইব পরে/ তোমার চরণ তলে?’... এই রকম আরও বেশ কিছু চরণ ছিল; যা ছিল প্রধানত শোষিতের পক্ষে এক ধরনের রূপক-আশ্রিত হাহাকার প্রতিবাদের প্রকাশ
         আমি শরৎচন্দ্রের নারীর মূল্য প্রবন্ধটি ৮ম শ্রেণিতে থাকালীন পাঠ করি প্রবন্ধটি আমাকে বিশেষ ভাবে আলোড়িত করে সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনগুলিতে -বিষয়ে আরও অনুসন্ধান শুরু করি তখন দৈনিক ইত্তেফাকের সাথে সাপ্তাহিক রোববার নিয়মিত সংগ্রহ করে পাঠ করতাম সিরাজগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরিতে এক বিকেল না গেলে, বিমর্ষ হবার অভিজ্ঞতা পেতে শুরু করেছি বিভিন্ন দেশের আমাদের দেশের নারী সমাজের বর্তমান অবস্থান বিষয়ে সপ্তাহ দুয়েকের প্রচেষ্টায় প্রবন্ধটি লেখা শেষ করি প্রবন্ধের শিরোনাম কী দিয়েছিলাম এখন আর মনে নেই রওশন ইবনে রহিম সম্পাদিত একখানি সাহিত্য পত্রিকা যেটি সিরাজগঞ্জ থেকে প্রকাশ পেত; সেখানে প্রবন্ধটি ছাপা হয়েছিল পত্রিকাটির নাম ছিল সাহিত্য উন্মেষ গোষ্ঠীগত উদ্যোগে ছোটকাগজের তো বছরে তিন অথবা চারটি সংখ্যার পর পত্রিকাটি আর প্রকাশ পায়নি
             তখনও এরশাদ সাহেবের সময় আসেনি; মেজর জিয়া তখন দেশের নায়ক আমাদেরকে ছাদখোলা ট্রাকে উঠিয়ে ভুরাঘাটে নিয়ে গিয়ে খাল-খনন কর্মসূচিতে ঠেলে দেয়া হলে আমরা ইউনেস্কোর বিস্কুট টিফিন হিসেবে পেয়ে কোদাল মাটি আর কাদার ভেতর নিজেদেরকে বেশ খানিকটা স্বাধীন হিসেবে আবিষ্কার করলে সহসা মনে পড়ে পাঁচ বছর পেছনের কথা, স্বাধীনতার পর তখন আমরা আলমডাঙাতে থাকি; আলমডাঙা একটি থানা তখন উপজেলা বলে কিছু ছিল না ছিল থানা, মহুকুমা, জেলা, বিভাগ সেই তখন, আলমডাঙার বটতলার মোড় পার হয়ে আমাদের সরকারি প্রাইমারি স্কুল; টিনের চালার নিচে দাঁড়িয়ে থাকা সেই স্কুলটার মাঠ ছিল বিশাল স্কুলের একটা টানা পুরোনো দালান ঘরও ছিল সেই স্কুলে, তখন টিফিনে বিলেতি দুধ বিলি শুরু হয়েছে একদিন আমি কাগজের ঠোঙায়, যে ঠোঙা অংক খাতার পাতা ছিড়ে তৈরি করা হয়েছিল; সেই ঠোঙায় বিলেতি দুধ নিয়ে বাসায় ফিরছি আমরা তখন আলমডাঙা থানা কাউন্সিলের দোতালা সরকারি বাসভবনে থাকতাম
            আমি বন্ধুদের সাথে হাতের ঠোঙায় বিলেতি দুধসহ ফিরছি বাসার দিকে অথচ সেদিন বাসায় না ফিরে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মিশে গিয়েছিলাম পাখি শিকারিদের সাথে আদিবাসী ওরা ওদেরকে বলা হত কলু আসলে শব্দটি ছিল কোল; যে যার তো করে বলত কলু, কুলু, কোল মুণ্ডাদের থেকে পৃথক ছিল ওদের স্থিতিহীন জীবন ওদের হাতে থাকত লম্বা লম্বা চিকন বাঁশ প্রতিটি আলোকিত সেই বাঁশ লম্বায় পাঁচ হাত একটির মাথা আরেকটির ভেতর ঢুকিয়ে তিন চারটি বাঁশ জোড়া দিয়ে, এভাবে সকলের উঁচুতে যে বাঁশটি থাকত তার মাথায় এক ধরনের আঠা লাগানো থাকত খুব সন্তর্পণে জোড়া দেওয়া প্রায় পঁচিশ ত্রিশ হাত বাঁশ ঝাঁকড়া কোনো বট, পাকুড় অথবা দেবদারু, গাব অথবা পুরোন কোনো ছফেদা গাছ, আর আমি তখন সেই পুরোন গন্ধে কাঁপতে থাকা সব রকমের বৃক্ষরাজির নামও যে ঠিকঠাক জানতাম তেমনও নয়; যাই হোক সেই পুরোন আকাশ-প্রবণ বৃক্ষের ঝাঁক ঝাঁক শাখায় লুকিয়ে থাকা, নিরাপদে থাকা, বিশ্রামে থাকা, আনন্দে থাকা পাখির ঝাঁকের দিকে খুব ধীরে ধীরে ওরা ঠেলে দিত সেই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর বাঁশ-শলাকা; সুদৃশ জাদুর লাঠি দীর্ঘ বাঁশের মাথায় আঠার সাথে লেগে যেত সবুজ পাখি, কালো পাখি, লাল পাখি, ধূসর পাখি অথবা মেহগনি রঙের পাখি আমি অবাক আনন্দে আর আশ্চর্য উত্তেজনায় তাকিয়ে থাকতাম সেই আঠায় আটকে যাওয়া পাখির দিকে; কী আশ্চর্য জান্তব জীবন; পাখা ঝাপটে উড়তে চাইছে শূন্যে! তারপর সেই পাখি কাচা বাঁশের খাঁচায় ন্দি হলে আমার উত্তেজনা, আমার আনন্দ ন্দি হয়ে যেত সেই খাঁচাবন্দি পাখির সাথে; আমি ক্রমাগত আটকে যেতে থাকতাম রহস্যের খাঁচায় আমি ওদের সাথে সেই যারা বাঁশ চিরে চিরে কত রকম গৃহস্থালী তৈজস ধামা, কুলা অথবা মাছ ধরার সরঞ্জাম বানাতে বানাতে লাল কাঁচা রঙে ওগুলোকে রাঙিয়ে দিয়ে ওদের ভাষায় গান আওড়াতে আওড়াতে বিড়িতে আগুন ধরাত; আমি সেই তাদের সাথে আমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিচ্ছিল তাজা দুপুরকে এলোমেলো ছড়িয়ে ফেলতাম ওদেরকে কখনও হুকা খেতে দেখিনি আমি ওরা বাস করত খালের ধারে কখনও বা আমাদের স্কুলের পাশের খোলা জায়গায় অথবা ওদের আমি দেখতাম রাস্তার ধারে খালের পাশে উদোম রোদের নিচে শুয়ে আছে মহানির্বিকার একদিন হাঁটের ভেতর  সঙ্গন কাকাকে দেখে চিনে ফেলেছিলাম আমি সঙ্গন কাকা আমাকে বাতাসা খাইয়েছিল সঙ্গন কাকার ছেলের নাম ছিল পেঙ্গা পেঙ্গার সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল বেশ আঠাল ভাবে অথচ তখনও আমি জানতাম না এই আঠাল বন্ধনের জন্য আমাকে কাঁদতে হবে একদিন

          সুদীর্ঘ রোদের ভেতর, হাজার রঙের রাস্তার ভিড়ে আমরা দুবন্ধু কাগজের ঠোঙার ভেতরে আমাদের নিরিবিলি স্পর্শকাতর আঙুল ঢুকিয়ে বিলেতি দুধ তুলে নিয়ে আমাদের জিহ্বা ঠোঁট সাদা করে নিতাম; দাঁতের সাথে দুধের মিহিগুড়া লেগে থাকতো; শুভ্র আঠালো; মিষ্টি তার অনুভব এই অনুভবের ছোঁয়ায় পেঙ্গা হেসে উঠলে, বটতলার বিল্লু পাগলার সাথে ওর এক ধরনের মিল খুঁজে পেতাম আমি ওকে কখনও কাপড় পড়তে দেখিনি নুনুর সাথে বাঁধা ছিল এক জোড়া ঝুনঝুনি সেই শব্দকাতর ঝুনঝুনি ছিল ওর লজ্জাছোঁয়া পোশাক স্পর্শকাতর ঝুনঝুনি বেজে উঠত কালো চামড়ার স্পর্শে সেই বেজে ওঠা ধ্বনির সাথে কেঁপে কেঁপে উঠত ওর কালো ত্বক আমার বন্ধুর নির্বোধ কালো মাজার সাথে লেপটে থাকত মোটা-কালো সুতো সেই অলৌকিক সুতোর সাথে বাঁধা ছিল তিনটি মাদুলি; একটি রূপোরঙা আয়তাকার চ্যাপ্টা; দ্বিতীয়টি কালচে, লোহার পাত কেটে তৈরি গোলাকার মার্বেলের তো; আর আরেকটি ছিল বন্দুকের গুলির তো সিসারঙ লম্বাটে গোল গলায় প্যাঁচানো ছিল কাপড়ের পাড় দিয়ে হাতে কাটা ফিতা ফিতায় বাঁধা জোড়বাঁধা জাদুর দোলক; একটি পিতলরঙ অপরটি রূপোর পানিতে ধোয়া রূপোরঙ জাদুর তাবিজ
          সেই তখন, আমি ছিলাম উঠতি এক সাহেব-পুত্র যে সাহেব দেশ স্বাধীন হবার আগেই গ্রাম্য টানাপোড়েন থেকে সাহেব হতে গিয়ে ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না যে সে আসলে বাঙালি নাকি অন্য কিছু আসলে সাহেব কাকে বলে তখন আমার বাবা ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি তবে তাকে ইংরেজি আউড়াতে দেখতাম বিস্তর আরও দেখতাম সাধারণ মানুষের সাথে তিনি মিশে গেলেও তার চারপাশে কেমন এক ধরনের ভয় জড়িয়ে থাকত অথচ আমার বাবার কাজ ছিল কৃষকদের সাথে তিনি ছিলেন বিএডিসি- কৃষি কর্মকর্তা অথচ কৃষকরা তাকে, তার পুত্রকে যেন বা রাজাজ্ঞানে পুজো দিত তখনকার সময়টাই ছিল সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের অপার বিস্ময়ের সময় তখন তাদের কাছে এক একজন শিক্ষিত আধা শিক্ষিত মানুষ মানে এক একজন রাষ্ট্রনায়ক; যাবতীয় সম্মানের একক অধিকারী আর ওরা শিক্ষিত মানুষগুলোকে, সরকারের লোকগুলোকে ভক্তি করতে পারলে যেন বা বেহস্ত কিনে ফেলত, এমন একটা ভাব-পরিবেশ এমন একটা সময়ের ভেতর দিয়ে আমি চলতে চলতে কখন কীভাবে যে জিয়াউর রহমানের খালকাটা কর্মসূচির ভেতর এসে হুমড়ি খেয়ে পড়েছি, তা বুঝতে না পারার তো কোনো বিষয় নয় বরং এর ভেতর জড়িয়ে আছে আমার অভিজ্ঞতার প্রতিটি স্তর; যে স্তরের সাথে মিশে গিয়েছে প্রতিটি দিনের প্রতিটি মানুষের প্রতিনিয়ত জান্তব হয়ে ওঠার গল্প এই জান্তব জীবনের হাত ধরে একটু একটু করে আমি বুঝতে শিখেছি আমাদের ভেতর ভদ্রলোক হিসেবে দাবীকৃত অনেকেই, পাশ্চাত্য ধারায় সভ্য হয়ে উঠতে পারেনি এমন সাধারণ মানুষকে নিচু শ্রেণির মানুষ বলে খারিজ করে দিচ্ছে অথচ পাঠক, আমি আপনাদের বিশ্বাস করাতে চাইছি পেঙ্গাকে আমি ভালোবাসতাম তারপর আজকে এই বয়সে এসে আমি নিজেকে প্রশ্ন করছি, আসলে কি তাই? আমি তা বিশ্বাস করি না আমরা লেখকেরা যখন নিজে যা বিশ্বাস করি না অথচ আপনাকে আমরা ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করিয়ে তা বিশ্বাস করাবার চেষ্টা করি তখন আমার নিজের চেহারাটা কেমন দেখায় তা ভেবে আমি চমকে উঠি লেখক জীবনের প্রকৃত যন্ত্রণা এখানেই; আমার ভালোবাসাকে, আমার বিশ্বাসকে আমি মিলিয়ে নিতে পারি না আমার রিয়েলিটির ভিত্তিতে
       এই যে অপ্রিয় কথন, এর অনুসন্ধান আমি করতে শিখেছিলাম সেই আমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক জীবন থেকেই এখন আমি বুঝতে পারছি লেখকের অথবা একজন শিল্পীর নান্দনিক আবেগ রাজনীতিকদের কাছে যতটা অর্থহীন তার চেয়েও বেশি অর্থহীন আমার সেই প্রাথমিক জীবনের বন্ধু পেঙ্গাদের কাছে; যারা বেছে নিয়েছিল পাখি শিকারি জীবন; প্রাকৃত, নিরাভরণ জীবন এতটা জীবন পিছে ফেলে এসে আজ তাদের দিকে তাকিয়ে আমি বুঝতে পারছি মানুষ হিসেবে আমি কতটা স্বার্থপর! যারা সুখের পেছনে ছোটে তারা স্বার্থপর সেই পাখি শিকারির দল, তারা কি সুখের পেছনে ছুটেছে? তারা কি স্বার্থপর? কেমন তাদের সুখ? তারা বসবাস করতো অনিশ্চয়তার ভেতর, খাদ্যহীন, উলঙ্গ অথচ আমি নান্দনিক আকাঙ্ক্ষায় আমার লেখায় নান্দনিক আবেগে বলতে চেষ্টা করি, এই যে অনিশ্চয়তার ভেতর বসবাস, এই যে স্বপ্ন, এই যে পরাজয় এগুলো ভয়ানক কষ্টের হলেও এর ভেতর এক ধরনের আনন্দ আছে; আছে স্বাধীনতা আর দিগন্তহীন উলঙ্গ জীবন এইভাবে আমি জীবনকে সহনীয় আর রোমান্টিক চাদরে জড়িয়ে প্রকৃত বাস্তবতা থেকে আপনাকে দূরে সরিয়ে নিয়ে আসি; তৈরি করে দেই এমন এক মিথ্যার জগত যেটা এক ধরনের নেশার জগত মাতাল পাঠক অথবা প্রেমিক লেখক সকলেই কি নেশাগ্রস্থ, বাস্তববিমুখ? তাই যদি না হয়, আজ আমি কেনই বা জীবনের যাবতীয় নষ্টকাতর কষ্ট আর অপ্রিয় বাস্তবতাকে লেখার উপকরণ হিসেবে ছিড়ে ছিড়ে টেনে তুলতে শুরু করেছি বিস্মৃতির অতল গহীন থেকে?

               আমরা তখন সিরাজগঞ্জে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর একেবারে তীর ঘেঁষে বি.এল. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়; আমার বিদ্যালয়; আমাদের বিদ্যালয় এক একটি রাষ্ট্রীয় সময়ের মতো, একটি শাসন ব্যবস্থার সাথে আরেকটি শাসনকাল জোড়া দিয়ে আমি তখন ক্রমাগত প্রশ্নকাতর হতে শুরু করেছি ব্রিটিশ আমলের বনোয়ারি লাল রায়ের লাল ইটের তৈরি পুরোনো আর ভয়ানক রকমের উঁচু স্কুল ঘরের বারান্দার নিচে যে লোহা কাঠের কালো কালো বিম তার ভেতরে চড়ুয়ের বাসা, অজস্র, ঝাঁক ঝাঁক গরাদহীন জানালার পেছনে পুরোনো ঝাকড়া আম গাছের পাতায় মিশে আছে সবুজ লাল ঝুটিওয়ালা টিয়ে আর তখন সেই টিয়ে আমাকে মুহূর্তেই নিয়ে যেতো পিছে ফেলে আসা পাখি শিকারিদের কাছে আলমডাঙ্গার বটতলা পার হয়ে আমি হেঁটে যেতাম কোল যুবকদের সাথে, আমার বন্ধু পেঙ্গা সব সময় আমার আগে আগে হেঁটে যেতো আমরা হাঁটতাম বাঁশের সাথে বাঁশ জোড়া লাগিয়ে টিয়ে শিকার জীবনের মায়াবী রহস্যের ভেতর; গভীর আর ভরাট সেই রহস্য স্কুল ছুটির পর সেই সবুজ অস্থির টিয়ে পাখি আমি ইউনেস্কোর ভিক্ষে হিসেবে পাওয়া এক ঠোঙা সাদা বিলেতি গুড়ো দুধের বিনিময়ে পাওয়ার চেষ্টা করতাম সেই রাষ্ট্রীয় সময়ের অন্ধকারে সারাদিন পর সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হলে আমি পথ হারিয়ে ফেলি; একটি স্বাধীন দেশের ভেতর আমি ঠিক পথ চিনে নিতে পারি না

          সিরাজগঞ্জে আমাদের ভেতর কেউ কেউ ফুলকুড়ির প্রযত্নে স্বাধীনতা বিরোধী ছাত্র শিবিরের দিকে হেঁটেগেল আর আমরা গুটিকয়েক বালক সরকারি দালানের গায়ে মোটা লাল দাগে লিখে রাখা মেজর জলিল, রব, মান্না, ইনু, কর্নেল তাহের অথবা কর্নেল তাহেরের ভাই আনোয়ার, সাঈদ, ইউসুফ, বাহার, বেলালের সাম্যবাদি শ্লোগানের দিকে, জাসদের লালঝাণ্ডার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বুঝতে শুরু করলাম তখনও ভিয়েতনামে যুদ্ধ চলছে; অবচেতনে শুনতে পেলাম সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টির কথা আমরা তখন সবেমাত্র স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি অথবা স্বাধীনতার বিপক্ষে মাওবাদীদের ভূমিকা আর রাজাকার-জামাতীদের মুখের রেখা পাঠ করতে শুরু করেছি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় পা রাখার আগেই আমরাচিকাশব্দটির সাথে পরিচিত হলাম অবাক বিস্ময়ে জমাটবাঁধা সন্ধ্যার আলোতে দেখতে পেলাম প্রতিদিনই কারা যেন রাতের অন্ধকারে রাস্তার সমান্তরালে প্রতিটি দেয়ালের গায়ে লাল কালিতে চিকা মারতে শুরু করেছে; লিখে রেখে যাচ্ছে নতুন নতুন স্লোগান আমরা অনেকেই তখন দেয়ালের গায়ে রাগি আর একরোখা মোটা রঙতুলির লাল আঁচড়ে লেখা, ‘সাম্রাজ্যবাদশব্দটি আবিষ্কার করে শিহরি হলাম
          বি.এল. স্কুলে পড়াকালিন সময়েসাম্রাজ্যবাদশব্দটি আমাকে অজস্রবার নিয়ে গেছে পিছে ফেলে আসা আমার বন্ধু পেঙ্গার কাছে; তাদের উলঙ্গ জীবনের কাছে আমি বারবার ফিরে যাই আলমডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুলের ধুসর মাঠে মাঠে মাঠে চোরাকাটা চোরাকাটার ক্ষুদ্র ডগায় সাদা লবণ ফুটে আছে অথচ বাজারে তখন লবণ-সংকট; এক কেজি চাউলের পরিবর্তে পাওয়া যায় দুই ছটাক লবণ খলিল কাকা কলেজ ছেড়ে আলমডাঙ্গার লাল রেলস্টেশনে লাল রেল গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকেন পাঁচ পয়সা দিয়ে চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে চা খেতে খেতে গল্প করার তো কারো পকেটে পয়সা থাকে না সেই সময়, উঁচু প্লাটফর্মের ওপর এখনকার মতো কোনো দোকান বা চা স্টল ছিল না স্টেশনের অনেক উঁচু থেকে ধাপে ধাপে নিচে নেমে আসা প্লাটফর্মের সিড়ির শেষ সীমানা পাড় হলে হাতের ডানে বেশ কিছুটা দূরে অনেকগুলো ঘোড়ার গাড়ির পেছনে একটা কামারঘর; হাপরের মুখে লাল কয়লা; জ্বলজ্বলে আগুন ফুসে উঠছে বারবার; ঘোড়ার গাড়ির চাকা মেরামত অথবা কখনও বা ঘোড়ার পায়ে নাল লাগানোর কাজ চলছে হাতুরির আঘাত থেকে কিছুটা দূরে একটা বাঁশের মাচা ঘিরে সুখন মিয়ার চায়ের দোকান; চায়ের দোকান বলতে সুখন মিয়ার একমাত্র দোকান আমি হাফপ্যান্ট রে সুখন মিয়ার চায়ের দোকানের সামনে, সেই কামারখানার সামনে অপলক দাঁড়িয়ে লাল দগদগে লোহা পেটানো দেখতাম কানে বাজতে থাকে লাল দগদগে লোহা পেটানোর শব্দ দুপুরের পর দুপুর, অজস্র লম্বা চওড়া বিকেল ধরে সেই শব্দ কিছুতেই আমার কান থেকে সরতো না; আমি নেশাগ্রস্থের তো সেই শব্দের রেশ ধরে রেলরাস্তার ওপর পাথরের বিচিত্র রকম আকৃতি দেখতে দেখতে তিন নম্বর সিগনালে বরাবর চলে যেতাম আরও দুটো সিগনাল পা হলে লাল রেলব্রিজ; যে ব্রিজের ওপর রেলের স্লিপারের ফাঁক গলে অনেক নিচে দেখা যেতো গভীর কালো জল; জলের ওপর ভাসমান বিশাল গোল গোল পদ্মপাতা



           লাল লম্বা ট্রেনে করে ব্ল্যাকের লবণ আসে; ভারত থেকে বাইসাইকেলে করে অনেকের সাথে খলিল কাকা লবণের ছোটো ছোটো বস্তা নিয়ে তালতলির দিকে চলে যান কালো মোটা দানার লবণ তখন আমাদের অভিজ্ঞতায় ছিল না যে লবণ কখনও সাদা রঙের হতে পারে; অথবা সেই লবণ প্যাকেটে মোড়ানো থাকতে পারে তখন দর্শনা চিনির কল থেকে বাজারে যে চিনি আসতো তাও ছিল কালো মোটা আর ভেজা আমার বন্ধু পেঙ্গা চিনি খেতে পছন্দ করতো ওর জন্য রান্না ঘরের মিটসেফের ভেতর রাখা কাচের বোয়ামে হাত ঢুকিয়ে আমি চিনি চুরি করতাম কখনও বা পেঙ্গা চিনি না এনে লবণ আনতে বলতো; আমি সহজে বাসায় লবণ খুঁজে পেতাম না; আমার কান্না পেতো কান্না গোপন করে ওকে আমি ইউনেস্কর ভিক্ষে হিসেবে স্কুল থেকে পাওয়া বিলেতি দুধের ঠোঙা দিয়ে দিতাম পেঙ্গা আমাকে কাঁচা বাঁশের খাঁচায় ন্দি, কাঁচা রঙের সবুজ টিয়ে আমার কাঁচা হাতে ধরিয়ে দিলে আমি কান্নাগোপন চোখে বাসায় ফিরে বাবার বকা খাবার ভয় ভুলে গিয়ে সরাসরি দোতালায় পিছনের বারান্দায় চলে যাই স্কুল থেকে সেদিন আমি বাসায় ফিরেছিলাম সন্ধ্যার অনেক পর তখন ১৯৭৩ সন্ধ্যার পর সহসা কেউ বাইরে থাকে না অনেক অনেক বছর পর ২০০৬ সালে এসে আমি আলমডাঙ্গার সেই সন্ধ্যাকাতর ভয়ের কথা লিখেছিলাম আমার গল্পে; যার শিরোনামশত্রুসম্পত্তি যে গল্পে পেঙ্গার কোনো জায়গা হয়নি



---------------------------------------------------------------------------------------
না পড়ে চলে যাবেন না মতামত রেখে যান এখানে পোস্ট করার সময় আপনার ই-মেল পাসওয়ার্ড চাইতে পারে দিন ওটা আপনি গুগলকে দিচ্ছেন একবারই দিতে হবে আর যদি প্রযুক্তিগত কারণে বার বার মতামত পোস্ট করা সত্বেও মতামত যদি পোস্ট না হয় তাহলে সম্পাদকের ফেসবুকের ইনবক্সে পোস্ট করুন পরে এখানে পোস্ট করে দেওয়া হবে নাহলে achenayatri@gmail.com-এ মেল করুন অনেক আন্তরিকতার সাথে আমরা এই কাজটা করি তাই এই লোভটা সামলাতে পারি না সমালোচনা করেই লিখুন কিন্তু লিখুন আশায় আছি ধন্যবাদ

মন্তব্যসমূহ