বিভাস রায়চৌধুরী

একুশে-র চিরকবিতা
কুয়োভরতি আছে রক্ত... আছে মা... একুশে-র চিরকবিতা...
          অন্ধকার থেকে পাক খেয়ে উঠে আসে ১৯৫২...
                                     একুশে ফেব্রুয়ারি...

          চিরকবিদের নাম সালাম, বরকত,
                   রফিক, জব্বার...(অন্ধকারে ফুটছে জবাফুল...)

কুয়োভরতি শহিদেরা সারি সারি
            বানাচ্ছে আগামী শিশুর ইস্কুল...
বুকে আগলে আছে দোয়াত-কলম
            এবং তাদের কচি কচি জিভ ...

কুয়োর দু-পাশে আমরা দুই বাংলা,
          আজ আমরা সকলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ...
                             মেডিকেল কলেজের সামনে...
 যেন আজ আর মধ্যিখানে কোনো কাঁটাতার নেই...
যেন কার্জনের মতো
স্বাধীনতা আসলে আমাদের করতে পারেনি দু-ভাগ!

কুয়োভরতি রয়েছে শপথ...আছে মা... চিরকবিতা...
         চিরকবিদের দেখে আমরা যত কাঁদছি,
                ততই প্রেমিক হয়ে উঠছে ভাষা...
ততই ঠোঁটের সামনে এসে যাচ্ছে ঠোঁট...
               ততই হাতের সামনে এসে যাচ্ছে হাত...
কুয়ো রক্তে ভরে যাচ্ছে আরও...
আমরা বলতে শিখে গেছি-- মারো, যত খুশি মারো!
      আমরা কান্নার ভাষা, আমরা প্রেমের ভাষা 
      আমরা শরীর থেকে মুছে দিতে পারি?

কুয়োর দু-পাশে দুইবাংলা...
কুয়োভরতি একুশে... একুশে ফেব্রুরারি...


(কাব্যগ্রন্থঃ শিমুলভাষা, পলাশভাষা/ ১৯৯৯)



মন্তব্যসমূহ