ছোটগল্পঃ গল্পটি কোনো জীবিত বা মৃত টকশো’র সাথে সম্পর্কহীন// আইরিন সুলতানা

গল্পটি কোনো জীবিত বা মৃত টকশো’র সাথে সম্পর্কহীন
 ১.
তিনি খোশ মেজাজে গ্রিনটিতে চুমুক দিতে দিতে এক হাতে ট্যাবটা নিলেন অন্যহাতের কখনো বুড়ো আঙ্গুল, কখনো তর্জনী সরসর করে বুলালেন টাচস্ক্রিনে অনলাইন পত্রিকাগুলো পড়ে নিচ্ছেন টি টেবিলে দু’তিনটে দৈনিক রাখা আছে  ওগুলোর পালাও আসবে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে তিনি হালনাগাদ থাকেন যে কোন প্রসঙ্গ উঠলেই চোস্ত বক্তব্য ঝেড়ে দেন ভারী চশমা চোখে লাগিয়ে চেহারায় কেতাদুরস্ত ভাব টেনেছেন সুশীল সমাজে তিনি নিজের মেকওভার ঝালিয়ে নিয়েছেন  বুদ্ধিজীবী হিসেবে তার বর্তমান পেশা শিক্ষকতা এক সময় অল্পকিছুদিন সাংবাদিকতা করেছেন বছরখানেক একটি অখ্যাত পত্রিকার বার্তা সম্পাদক পদেও কাজ করেছেন এতে নানা সংগঠনের, গোষ্ঠির, ব্যক্তিবর্গের সাথে তার চিনপরিচয় ঘটে পূর্বেকার সেই সব পরিচয়সূত্র তার এখনকার প্রোফাইলে কাজে দিচ্ছে  ফেসবুকে তার অনুসারী সংখ্যাতত্ত্বে দশ হাজারের মত হয়ে গেছে মোটে ছ’মাসে তিনি ভাবছেন তার পেইজটা ফেইসবুক ভেরিভায়েড করিয়ে নেবেন এর একটা ভার্চুয়্যাল আত্মমর্যাদা  রয়েছে ভাবতে ভাবতে ঠোঁটের কোনে প্রতিবার হাসি খেলে তার  

অনলাইন পত্রিকাগুলো দেখা শেষ করে কাগুজে দৈনিকগুলোও দেখলেন তিনি তার খোশ মেজাজ আর অশেষ যত্ন নিয়ে পত্রিকা দেখার বিশেষ কারণটি হল, আজ তিনি তিনটি টকশো’র বক্তা সন্ধ্যায় বেরিয়ে পড়বেন চ্যানেলের পথে শেষ টকশো গড়াতে গড়াতে রাত একটা হবে তার আজকের দিবাকার্যদিবসে রয়েছে, দু’টো ক্লাস, আর  বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির একটা মিটিং তিনি পাঞ্জাবির ভাঁজ নিপাট রেখে চেয়ার ছেড়ে ওঠেন তার এখনই রওনা দেয়া ‍উচিৎ

২.
ঝাঁ চক চকে প্রাদো ছুটছে সাঁই সাঁই করে পর পর দু’টো ফ্লাই ওভার পেরুল নিজে ড্রাইভ করতে পছন্দ করলেও, আর্থসামাজিক চর্চায় ড্রাইভার পালন জরুরী বিধায় মাইনে বরাদ্দ করে একজন ড্রাইভার নিয়োগ সুবিধার দিকটাও অস্বীকার করেন না তিনি যেমন গাড়ি পাহাড়া দেয়া আর ড্রাইভ করতে হচ্ছে না বলে পেছনের আসনে বসে কখনো ল্যাপটপ খুলে ইমেইল দেখে নেয়া যায়, আধেক পড়া গ্রন্থের অন্তত পনের-বিশ পাতা পড়ে ফেলা যায়, নয়তো মোবাইলে জমে থাকা এসএমএসগুলোর উত্তর করা যায় গাড়ির পেছনের আসনের ঘাড় বরাবর যেখানে সবাই টুকিটাকি ডেকোরেশন পিসদু’টো রঙিন বালিশ গাঁট করে বসিয়ে রাখে, তিনি সেখানটায় সাজিয়েছেন দেশিবিদেশি গ্রন্থ এই  গাড়িপাঠাগার দেখাতে তিনি যেচেই অনেককে লিফট দেন একবার চোখ বুলিয়ে সকলে তার মননশীলতার গুণগানও করে বিষয়টা তার জন্য উপভোগ্য

এই মুহূর্তে তিনি মোবাইলের নীলাভ টাচ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন একটা এসএমএস টাইপ সবে শেষ হল ছোট এসএমএস, তবে তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুঠোফোন বার্তার শুরুতে শুভদিন জানিয়েই তিনি লিখেছেন, আজ তাকে তিনটে চ্যানেলের টকশোতে পর পর দেখা যাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলাপে এরপর বেশ স্পষ্ট করে চ্যানেলের নাম এবং সময় শেষে রোমান অক্ষরে ক্যাপস লকে লিখলেন, ওয়াচ মি! এক এক করে জনা পঁচিশকে সেই মুঠোফোন বার্তা পাঠিয়ে দিলেন প্রচারেই প্রসার তার ঠোঁটের কোণ আবার প্রশস্ত হল তিনি দেহ নির্ভার করে এলিয়ে দিলেন আসনে

৩.
ক্লাসের শেষাংশের জন্যই আজ বিশেষ অপেক্ষা তার শিক্ষার্থী উপস্থিতি প্রতুল ক্লাসটা চট করে শেষ করতে এ্যাসাইনমেন্ট ধরিয়ে দিলেন সবা্ইকে খস খস করে হোয়াইট বোর্ডে  লিখলেন একটা চওড়া শিরোনাম শিক্ষার্থীরা টুকে নিল সে নাম তিনি সারা ক্লাস চোখ ঘুরিয়ে নিলেন আসলে একটু ‍উপযুক্ত সুযোগ খুঁজছেন ক্লাস নোটগুলো হাতে তুলে নিয়ে বেরিয়ে আসার ভঙ্গি করতে করতে হঠাৎ মনে হল এমন করে ঘুরে দাঁড়ালেন শিক্ষার্থীরা অনেকেই উঠে দাঁড়িয়েছিল ততক্ষণে কেউ পেছন ফিরে কথা বলছিল তিনি খুক করে  কেশে, মাত্র মনে পড়ল এমন অভিব্যক্তি আনলেন চেহারায় বললেন, ওহ হো! আজ যদি কেউ কোন ইমেইল করো বা ফোন করো, রাতে হয়ত আমি দেখতে পারব না আমার তিনটে টক শো আছে রাতে ছেলেমেয়েরা হুল্লোড় করে ‍উঠল কোন চ্যানেল? কয়টায়? হরেক প্রশ্ন ওদের বলতে চান না, অগত্যায় বলছেন, এমন করেই তিনি এক এক করে জানালেন তার টকশোসূচী শিক্ষার্থীরা যেন ভুলে না যায়, তাই বোর্ডে এ্যাসাইনমেন্ট শিরোনামের নিচেও লিখে দিলেন

৪.
মিটিংটা শেষ হব হব করতেই তিনি মনে মনে প্রস্তুতি নেন ’দেশের পরিস্থিতি কী বুঝছেন ‘, একজন প্রশ্ন করতেই সুযোগটা এসে গেল তিনি চায়ের কাপে চুমুক লাগিয়ে বললেন, কী কাকতাল দেখুন! আজই এই নিয়ে কথা বলব তিনটে টকশো’তে সকলেই খুব করে অভিবাদন জানালো তিনি চ্যানেলের নাম আর টকশো সুচী জানাতে ভুললেন না অতি  আগ্রহি একজন জানতে চাইল, তা কী করে ডাক পেলেন চ্যানেল থেকে? চকিতে তার মুখ কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করে তিনি সামলে নেন হেসে বলেন, এই আরকি! ওরা বেশ কদরটদর করে!

৫.
চ্যানেল থ্রি-সিক্সটি-ফাইভ এর দিকে যাচ্ছেন তিনি আজকের টকশো সূচীর প্রথমটি সমাপ্ত করে পরেরটির জন্য যাত্রাপথেএখন যে গাড়িতে বসে  আছেন সেটা চ্যানেলেরই  কয়েকটি  এসএমএস পেয়েছেন কেউ লিখছে কনগ্রাটস কেউ লিখছে অভিনন্দন লোকজন তার লাইভ বক্তব্য শুনছে ভাবতেই আবেশিত হন তিনি আসলে তার টকশো উপস্থিতি এই প্রথম নয় বছর তিনেক আগেও একটা টকশোতে এসেছিলেন তারপর আর ডাক পাননি তখন চ্যানেল আর টকশো’র আধিক্য কম ছিল, আর বক্তার সংখ্যা বেশি ছিল বলে একেকজনের ডাক পড়া তিথি গুণে গুণে হত এই দু’তিন বছরে চিত্রটা পালটে গেছে এত চ্যানেল আর এত এত টকশো কোন কোন বক্তা হিমশিম খেয়ে যান শিডিউল মেলাতে এই চ্যানেলে আধেক কথা বলে, ওই চ্যানেলে গিয়ে বাকি আধেক কথা বলেন তবে চ্যানেলের সাথে যোগাযোগে না থাকলে পিছিয়ে পড়তে হয় তিনি সেই যোগাযোগটাই করেছেন আঁটঘাট বেধে এবং সঠিক সময়ে

খুবই সম্প্রতি দু’জন নিয়মিত টকশো বক্তা আকষ্মিক দেহত্যাগ করেছেন জাতি এই দুই মৃত্যুকে বহুমাত্রায় বিশ্লেষণ করলেও, তাদের মৃত্যুর অপূরণীয় ক্ষতি অনুধাবন করেছে মূলত চ্যানেলেগুলো টকশোতে এদের উপস্থিতি টিআরপি ধরে রাখতে সহায়ক ছিল এই ঘটনার পর চ্যানেলেগুলো বুঝতে পারল, তাদের কিছু রিডানডেন্ট বক্তা রাখা দরকার কার কখন ওপরওয়ালার ডাক আসবে, তা তো আর চ্যানেলওয়ালারা জানেন না; তবে আবার কারো মৃত্যুতে অনুষ্ঠানে যেন ভাটা না পড়ে এই রিডানডেন্ট প্রজেক্টই তার বুদ্ধিজীবী হওয়ার সম্ভাবনাকে পোক্ত করে দিল তিনিও বেশ দক্ষতার সাথে তিনটে যোগাযোগ ডিল করেছেন শিডিউল মিলিয়েছেন তিনটে চ্যানেলেই তাকে গাড়ি করে নিয়ে যাচ্ছে যেহেতু রাতদুপুর হবে, তাই শেষ চ্যানেলেটির গাড়ি তাকে বাড়ি পৌঁছে দেবে নিজের গাড়ি থাকা সত্বেও তিনি আবেগিয় কৌশল অবলম্বন করেন জনৈক টকশো বক্তার সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুকে তুলে ধরেন সামনে বলেন, ’এই দেখেন না, টক শো’তে আসতে গিয়েই না মারা গেলেন ভদ্রলোক যাতায়াতটা একটু নিরাপদ না হলে… বোঝেনই তো পরিবার চিন্তা করে আমি আবার ড্রাইভারকে রাত পর্যন্ত আটকে রাখি না বাড়তি শ্রম করানোটা আমার আবার অনৈতিক ঠেকে…’ কোন চ্যানেলেই বাড়ারম্বর না করে গাড়ি পাঠিয়ে দিল তার জন্য          

৬.
আগের টকশো’র মেকআপ আছে মুখে এখনও তাও মেকআপম্যান ডিউটি পালনে পাফ দিয়ে দেয় মেকআপ পর্ব শেষে তিনি এখন মূল স্টেজে মাইক্রোফোন লাগানো হচ্ছে তার পাঞ্জাবির বোতাম ঘেঁষে তিনি নি:শ্বাস নেন গভীর একটু আগে টকশোতে বলা বক্তব্য পুনরায় ঝালিয়ে নেন এখন সব টকশো’র বক্তব্য এক ক্যালেন্ডারে মাস যাই হোক, সব চ্যানেলই থেমে আছে ঊনত্রিশে ফেব্রুয়ারিতে চার বছর পর পর একটি বাড়তি দিন গণতন্ত্রে বাড়তি কী এনে দিয়েছে তাই নিয়ে চর্বিতচর্বন করতে পারলেই টকশো’তে উতরে যাওয়া যায় সরকারি দল এই লিপ-ইয়ার সাড়ম্বরে পালন করেছে অন্যদিকে একটি বৃহত্তর দল সেই উৎসবে আমন্ত্রিত নয় তাদের মতে সরকারি তত্ত্বাবধানে এ ধরনের আয়োজন না করে আউটসোর্সিং করা দরকার কোন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানকে এই দায়িত্ব হস্তগত করলে সকল দলের অংশগ্রহণে ভারসাম্য  আসবে সরকারের বিপক্ষ দলটি পুনরায় উৎসবের আমন্ত্রণ পাওয়ার জন্য প্রাণপাত করলেও সরকার জানিয়ে দিচ্ছে ঊনত্রিশে ফেব্রুয়ারি কেবল চার বছর পরেই আসবে এই ঊনত্রিশে ফেব্রুয়ারিকে ঘিরেই চলছে টকশো দৌড়াচ্ছে টকশো’র বক্তারা তিনিও এই দৌড়ে বুঝেশুনেই সামিল

৭.
’আউচ’, অস্ফুট আওয়াজ করেন তিনি ক্ষুদে মাইক্রোফোনের পিনের খোঁচা লেগেছে বুকে তার স্টেজের লোকটি বারবার জিভ কেটে দু:খ প্রকাশ করল তিনি মৃদু হেসে কিছু হয়নি এমন আভাস দিলেন ঠিক দশ সেকেন্ড কাউন্ট ডাউন করে শো শুরু হয়ে গেল অপর দুই বক্তার সাথে তিনিও লাইভ এখন জনতার কাছে টকশো সঞ্চালক উপস্থিত বক্তাদের নাম-পরিচয় জানিয়ে দিলেন ক্যামেরা ঘুরে সঞ্চালকের উপর আসতেই সঞ্চালক দু:খপ্রকাশ করে জানালেন, তাদের টকশো’র নির্ধারিত টপিক বিশেষ কারণে পরিবর্তিত হয়েছে  সর্বশেষ ব্রেকিং নিউজই হলো আজকের টকশোর ‘টক টপিক’

চ্যানেলওয়ালারা এভাবে মর্জিমাফিক কোন পূর্বাভাস না দিয়ে শেষমুহূর্তে টপিক বদলে দিতে পারেন না তবু তিনি ঘাবড়ালেন না একজন বক্তার দশদিক জানা থাকলে যে কোন টপিকের লেজ ধরে টান দিতে পারেন তিনি রাজনীতির হালচালের পুংখানুপুঙ্খ খবর রাখেন যে কোন ঘটনাই ঘটুক, এর সাথে ওর লেজুড় জুড়েবেঁধে নাটকীয়তা সৃষ্টিতে বেগ পেতে হবে না তাকে কিন্তু এখনকার ব্রেকিং নিউজটা কী?
টকশোর প্রথম বক্তা হিসেবে সঞ্চালক তাকেই বেছে নেন প্রশ্ন করে বসেন, এখনকার ব্রেকিং নিউজ সম্পর্কে তার অভিমত কী? উৎসুক চোখে একবার সঞ্চালকের দিকে একবার সামনের ক্যামেরার পাশের টিভি মনিটরের দিকে ফেরেন তিনি স্ক্রলিং নিউজ পড়ার চেষ্টা করেন সঞ্চালক তৎক্ষনাত বুঝতে পারেন সঞ্চালক আবার বলা শুরু করেন জনৈক অশীতিপর উম্মাদ একটি চ্যানেলের টকশো শুটিং চলাকালে অকষ্মাৎ ক্যামেরা ফ্রেমে পদার্পন করে একজন বক্তার মাইক কেড়ে টকশোজীবীদের নিয়ে ভয়ানক বিষোদগার করেছেন উক্ত উম্মাদ টকশোজীবীদের চুতমারানির কাছাকাছি একটি নিজস্ব আবিষ্কৃত শব্দেও সম্বোধন করেছেন বহুবার সঞ্চালক যখন এমনটা বলছিলেন, তিনি নিষ্পলক ছিলেন তিনি বস্তুত অপ্রস্তুত তিনি ঠিক বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, সঞ্চালক মাত্র চুতমারানি শব্দটি লাইভ উচ্চারণ করলেন লাইভ ক্যামেরা ফ্রেমে

৮.
তিনি যখন চুতমারানি শব্দটি নিয়ে ভাবছেন, তখন লাইভ টেলিকাস্টের প্রতি সেকেন্ড গননা চলছে ক্যামেরা ক্লোজ শটে তার মুখের উপরে অথচ তিনি বাকহীন সঞ্চালক দু’বার তার নাম নিয়ে চুতমারানি ব্রেকিং নিউজ সম্পর্কে মতামত জানতে চাইলেন তিনি বলার চেষ্টা করতে গিয়ে দেখলেন ঠোঁট নড়াতে পারছেন না মাইক্রোফোনটিও বুকে বিঁধছে মনে হচ্ছে বিশ সেকেন্ড চলে গেল কিন্তু তিনি কিছুই বলতে পারলেন না ওদিকে টেলিভিষন সম্মুখে থাকা দর্শকরা  অনেকেই রিমোট নাড়িয়ে ভলিউম বাড়িয়ে দিয়েছে চুতমারানি শব্দটি তাদের কৌতূহল জাগিয়েছে কিন্তু তিনি কোনভাবেই ঠোঁট নাড়াতে পারছেন না

সঞ্চালক আর সময়ক্ষেপন করলেন না শো মাস্ট গো অন কনট্রোল রুম থেকে সিগন্যাল দিতেই সঞ্চালক  একটি  বিজ্ঞাপন বিরতী নিলেন দর্শকদের কাছ থেকে জানালেন ফিরে এসে চুতমারানি টপিকে আরো কথা হবে   

৯.
বিজ্ঞাপন বিরতীর পর তাকে আর ক্যামেরায় দেখা গেল না ক্যামেরা সঞ্চালক ঘুরে সরাসরি চলে গেল দ্বিতীয় বক্তার কাছে ওদিকে ক্যামেরা ফ্রেমের বাইরে তিনি তেমনি বিহবল হয়ে বসে আছেন চেয়ারে তাকে উঠিয়ে নিতে এল দু’জন মাইক্রোফোন খুলে নিল তিনি বলতে চাইলেন, ক্যামেরা কোথায়? এখন তো আমার টক টাইম কিন্তু তিনি ঠোঁট নড়াতে পারলেন না তাকে যখন প্রায় জোর করেই মঞ্চ সীমানার বাইরে নিয়ে যাওয়া হচিছল, তিনি শুনতে পেলেন, টকশো’র দ্বিতীয় বক্তা একজন প্রয়াত দার্শনিকের উক্তি দিয়ে শুরু করেছেন, যে দার্শনিক বুদ্ধিজীবীদের ভণ্ডতম পর্যন্ত বলেছিলেন দ্বিতীয় যখন বক্তা বলছিল, সমাজে বুদ্ধিজীবীদের বুদ্ধিবেশ্যাও সম্বোধন করা হয়, তখন তাকে শুটিং কক্ষের বাইরে নিয়ে গেছে চ্যানেলকর্মীরা 

১০.
টকশো আরো একটি জমজমাট ইস্যু পেয়েছে অসংখ্য নতুন মুখে টকশোগুলো টগবগে এরা সবাই চ্যানেলগুলোর  রিডানডেন্ট প্রজেক্টের অংশটকশোর সকল বক্তা চুতমারানি টপিকে ক্যামেরা ফাটানো বক্তব্য দিচ্ছে  টিভি পর্দায় বারবার চুতমারানি উচ্চারণে দর্শক এতটাই উত্তেজনাবোধ করছে যে, হাগুমুতু চাপিয়ে টকশো দেখছে


 
সৌরদীপ্ত চৌধুরী

মন্তব্যসমূহ