সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
অণুগল্প// সেলাই // পাতাউর জমান
কাল বুধবার। কাল হাটবার। জব্বারহাট বসবে।
আজ মঙ্গলবার, খুব কাজের চাপ। নিয়ামতালির হাত মেশিনে নড়তে নড়তে,পা প্যাডেলে চাপতে চাপতে খেয়াল হল – এখনও ৩০পিস মাল বাকি।
না হলে হাপ্তা পাবে না। কথা দিয়েছিল - হুরমদিনা,ওর বঊ’কে – ‘কাল নিকোপার্কে ঘুরতি লে যাবানি। পানিতে এট্টু গা ভেস্কে মজা লে বানি’।
কিন্তু বিকেল গড়িয়ে। এখনো মাল খালাস হয় নি। বার দুয়েক জিয়াউল ভাবির ডাক, এ ফরমাস,সে ফরমাস,আয়রণ অয়ালার কাছে যাও, বাড়ির বাজার ঘাটের দায়িত্ব নাও - এ সব কোরতে কোরতে সময় খতম।
‘ঐ তো আর ২০টা মাল আছে’। দুপুরের ডাল-গোস্ত একটু বেশি হয়ে গেছিলো। উফ ঘুম পাচ্চে খুব। চারতে উঠে, ৯টাকার রজনিগন্ধার সাথে ৪টাকার বাবা তামাক মুখে ফেলে রাত ৭টা অবদি পোঙা ঘসড়ে কাজ করলে উঠে যাবে না আবার! ৮টায় জিয়া ভাই হাপ্তা দেবে।
-এটটু লম্বা ঘুম দিই
জীবন,মৃত্যু আর বতমানে ঘুম – ঠিক সময় আসে না, ঠিক সময় যায় না।
ঘুম ভেঙেই , পাচটা।
তাড়াতাড়ি, ঘড়ঘড়-জলেরকল-চা-কেতলি-পুরাতন রংচটা সেলাই মেশিন।
ফের ঘড়ঘড় সব্দে মেশিন বুনন তোলে।নিয়ামতের ভাবনার সাথে সেলাই মেশিনের শব্দ মেলে –
-৭টায় সব মাল হবে না?
হবে না রে হবে না।
-৮টায় জিয়া ভাই,হাপ্তা পাবে না!
পাবে না রে পাবে না।
-ধুর শালা,কাল নিকোপাক,হুরমদিনা-জলকেলি-মুখ মুখরা,সেলাই করতে পারবে না!
পারবে না রে পারবে না।
|
ছবিঃ সৌরদীপ্ত চৌধুরী |
মন্তব্যসমূহ