অনুবাদ কবিতা

কবি: মিরতা ফেলিসা বেনেগাস
দেশ: আর্হেন্তিনা
ভাষা: স্প্যানিশ
অনুবাদকঃ মৈনাক আদক 

আর্হেন্তিনার মেনদোসা জেলার সান কার্লোসে এক কৃষক পরিবারে ১৯৫২ সালে জন্ম কবি মিরতা ফেলিসা বেনেগাসের  শৈশবেই কবিতা লেখা শুরু করেন থিওজফি নিয়ে পড়াশোনার শেষে শিক্ষকতার কাজে যুক্ত হন ১৯৯০তে 'কোঙ্কুর্সো ইমাকুলাদা দে কোন্সেপসিওনে' তাঁর 'মারিয়া' কবিতাটি তাঁকে আর্হেন্তিনার নব্বইয়ের কবিদের সামনের সারিতে বসিয়ে দেয় ১৯৯৩ সালে মেনদোসার ছবির শহর, কবিতার শহর লুসানে চলে আসেন এবং সাহিত্যদল 'গ্র্রুপো লিতেরারিও লা ত্রাম্পা' অন্যতম সদস্যা হয়ে ওঠেন। আজও লুসানে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত জাতীয়
সাহিত্য সমাবেশের উদ্বোধন হয় তাঁর লেখা স্তবগানটি দিয়ে ২০১৪র মার্চে 'এদিতোরিয়াল কেলিওন' প্রকাশ করেছে কবির প্রথম বই 'সাগরের এপার ওপার' লুসানের অপর তিন কবির সাথে তাঁর লেখা কবিতার সংকলন 'সহস্র ঋতু' অক্টোবরে প্রকাশিত হয়েছে


আমি অপেক্ষা করেছিলাম
মূল কবিতা:  কোন্তাদো লাস ওরাস

আমি অপেক্ষা করেছিলাম
যখন চাঁদ হামাগুড়ি দিচ্ছিল
তার দোসর চন্দ্রালোকে
তোমার বুকে আশ্রিত প্রেমার্ত রেখাচিত্র

আমি অপেক্ষা করেছিলাম
তোমার কণ্ঠস্বর শুনব বলে অস্থির হয়ে উঠছিলাম
কথায় বোনা ইন্দ্রজাল ছাড়া
সময়কে কি ভীষণ শূন্য মনে হচ্ছিল


আমি অপেক্ষা করেছিলাম
যখন কফির ম ম গন্ধের আড়ালে
নীরব
তোমার চোখ আমাকে স্পর্শ করেছিল

যখন তোমার স্পর্শ থামিয়ে দিয়েছিল ঘড়ির কাঁটা
আর তোমার ঠোঁট সন্নিবদ্ধ করছিল এক ভালবাসার স্বর্গ
কেন এসেছিলে...
সময় তো অতীত হয়ে যাবেই



দিগন্ত 
মূল কবিতা: ওরিসোন্তে 
    
তোমার অনিশ্চিত পদক্ষেপ ডুবে যায় তোমারই জান্তব ছুরিকাঘাতে
গাঢ় আঁধার রাতে
নিজেকে ধরা দিও না !
হাওয়ায় ভেসে আছে সে
ভূতের বেশে
যে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে দিতে চায় তোমার সময়কাল
হলকর্ষণও আটকে দেয় তোমার মাটিতে
বদলে ফেলো এসময়
পাহাড়ের মাথায় তো তোমার জায়গা আছে ...
আলোকিত, সমৃদ্ধ
নিজেকে ধরা দিও না !
লড়াই জারি রাখো
জীবনযুদ্ধে
ব্যর্থতা পুড়ে ধোঁয়া হয়ে যায়
সংহত করো নিজেকে
নিজেই রাস্তা বানিয়ে নাও
প্রাণোচ্ছলতা পরিয়ে দাও ভবিষ্যতের দু-পায়ে
নিজেকে ধরা দিও না !
আগামীকাল...
তোমার পবিত্র দু-হাত
ভরে যাবে শস্যদানায়



গোলাপবাগান 
মূল কবিতা: এল রোসাল

অবসাদগ্রস্ত বলিরেখায় কুঞ্চিত সে মুখ,
উসকোখুসকো রুপোলি চুল,
ঠান্ডা, অনাভরণ, অশক্ত তার পা
এ কেমন যাপন তোমার রোসা সিলভেসস্ত্রে!

যদিও লাঞ্ছিতরাও বেঁচে থাকে পৃথিবীর এক কোণে
জীবনের সব আনন্দঘন মুহূর্ত ছাড়াই
ছাদহীন মানুষের জনপদে
শুকিয়ে যায় হারিয়ে যাওয়া পাপড়ির গোলাপ

রঙিন ঐশ্বর্যের পাঁচিলঘেরা
বাগানে হেঁটে যায় সে
দারিদ্র্যও মুখ ঘুরিয়ে নেয় অবজ্ঞায়

মৃত্যু তাকে ছিনতাই করে নেয়,
বিবর্ণ পড়ে থাকে তার মর্যাদা, আভিজাত্য
তার গোলাপসম দেহসৌরভও...


মন্তব্যসমূহ