শরীরের ভেতর জমে গেল বত্রিশ কবর
শরীরের ভেতর জমে গেল বত্রিশ কবর। লাল
নীল সবুজ অজস্র রঙের কবর আর কবরের ভার। হেঁটে চলে যাচ্ছি...
মরা বাগানের ভেতর থেকে ফড়িং উড়ে এসে বসে, প্রজাপতি উড়ে
এসে বসে। গামছা আর পোশাকের কঙ্কাল। রক্ত
আর মাংসের কঙ্কাল। কঙ্কালের ভেতর গোপনে বাস করছে মাটির ছোট
ছোট ডিম, গন্ধের
আতর। বৃক্ষের প্রেমরস, প্রাণরস আছে
খুব গোপন নাচে।
আমি নেচে উঠছি। আমি নেচে উঠছি
কেন? পৃথিবীর
কঙ্কালের ভেতর আমি এক গোপন নাচ? আমার নাচের ভেতর মাটির উল্লাস, মাটির উল্লাসের
ভেতর বৃক্ষের গোপন বসত।
আমি মরব না কারণ আমি জন্মিনি। আর যেহেতু
আমার জন্ম হয়নি সেহেতু আমি মরব না। আমার ভেতর আমি
জমা হয়েছি অজস্র কবর হয়ে। কবর আমার ভেতর হেসে ওঠে খলখল করে আমিও
কবরের ভেতর হেসে উঠি...
মৃত্যুর মুখের ভেতর পা ঢুকিয়ে বসে আছি
মৃত্যুর মুখের ভেতর পা ঢুকিয়ে বসে আছি। আমার
পা মৃত্যুর হৃদপিণ্ডে ছুঁয়ে গেছে। আর দেখ, মৃত্যুর আহাজারি। আর দেখ, তুমি আমার বুকের
ভেতর ব্যথা হয়েছ।
আমি ঈশ্বরের মুখের ভেতর অন্য এক পা ঢুকিয়ে দিয়েছি। ঈশ্বর
আর কথা বলতে পারে না। গোঁ গোঁ করে মৃত্যুর পা ধরতে চায় হাত
দিয়ে। দেখ, ঈশ্বরের কামড়ে আমার পা টনটন করে ওঠে না
আর। তুমি চড়ে আছ বিশ্বাসহীনতার এক রঙিন ঘুড়ির
পিঠে। আমার এক হাতে ছিঁড়ছি গোলাপের পাঁপড়ি আর
হাতে সমুদ্রে ওঠাচ্ছি বিক্ষুব্ধ ঢেউ।
আমি আমার চারপাশ থেকে সরে যাচ্ছি। আমি
আমার মাংস থেকে সরে যাচ্ছি। আমি আমার মৃত্যু
থেকে সরে যাচ্ছি। আমি আমার ঈশ্বর থেকে সরে যাচ্ছি।
শরীর যাদুঘর
তুমি আমার বুকের ভেতর বসে আছ, হাতে ধারাল ছুরি। রক্তের
লাগাম ছুটে গেছে, রক্তঘোড়া
বাঁধ মানে না। তুমি জোছনার বিষাক্ত হেমলক হয়ে থাক রক্তের
লালায়। একটা ছোট গোলাপের দাম একটা শরীরের সমান।
আমার বড়ই সন্দেহ, এ দেহ সত্যি সত্যি কোনো গান গাইতে পারে
কি না, কোনো
জলে ডুবে যেতে পারে কি না। আমার বিষাক্ত
কামড় পড়ে আমারই শরীরের যাদুঘরে। ‘শরীরের যাদুঘরে পুরো পৃথিবী সাজানো আছে’ বলতে বলতে একলোক
আমার শরীরের পাশ দিয়ে যায়। আমি তার কথার
সাথে একমত হবার আগে আরও বৃষ্টির অপেক্ষা করি, পোশাকের বোতামের ঘাট উপেক্ষা করে। এ পৃথিবী
একটা প্রাকৃতিক ঘড়ির মাদুর,
এ পৃথিবী একটা বাঘ তাড়ানো ঘোড়া।
মন্তব্যসমূহ