যার যার ব্যক্তিগত চিলেকোঠার
গল্প
আমরা উঁকি দেই তোমার ব্যক্তিগত
দেরাজে সন্তর্পনে।
হাতিয়ে নেই তোমার যত পুরনো প্রেমিক
অথবা প্রেমিকার ঘ্রাণ,
কিছুই আর থাকে না একান্ত।
সামাজিক বাজারে নিলামে চড়ে চিঠি, শুকনো গোলাপ, চুম্বন।
কেমন জেনে গেল সব,
জেনে যাচ্ছে সব…
তোমার ব্যক্তিগত বিকেল...!
তোমার ঘন জোছনায় আমাদের টিপ্পনী,
পাড়ায় কেচ্ছায় তোমার সবুজ মাঠ,
খিস্তিতে জলভেজা সন্ধ্যা।
যত্নে গোছানো আলমারিটা আমরা তছনছ
করে দেই।
আসলে আমরা হানা দিয়ে ফিরি
তোমার একান্ত ব্যক্তিগত হৃদপিণ্ডে;
যতক্ষণ না তুমি উফ বলে ওঠ।
তারপর আমাদের প্রস্তুতি ছিল চোখ
টিপি’র!
কারণ আমরা জেনেছিলাম কিছু ব্যক্তিগত
মাপ;
শার্ট। বুক। অনামিকা। অথবা সিঁথি।
মজলিসে তোমার শালিস চলছিল।
আর চলছিল আমাদের ফিসফাস।
তখনই তুমি এলে…
হাতে ধরা সমন;
আমাদেরই জারি করা ছিল ওটা।
একটা রসাল তুবড়িতে অশ্লীল হাসির
শোরগোল থামিয়ে
অদ্ভুত কণ্ঠে বিড়বিড় কর তুমি!
বললে, শুকে দেখ…
এগুলো তোমাদেরই গোপন গল্প।
এক এবং আলাদা।
শোনো, এ সমাজে ব্যক্তিগত দেরাজটা খোলা রাখা অপরাধ।
একান্ত আলমারির চাবিটা কখনও ভুল
মানুষের হাতে রাখতে নেই।
চিরকুটগুলো দুমড়ে ছুঁড়ে দিলে
ভেবেছো কেউ পড়বে না?
ওগুলো অ-পাঠকের হাতে পড়ে ঠিকই। যারা ভুলভাল আবৃত্তি করে।
… আমি সেদিন কুড়িয়েছিলাম সব।
প্রহরী ছিলাম তোমাদের একান্ত
গোপনীয় শিহরনের।
নয়তো আজ পঞ্চায়েতে তোমার গোপন
কাব্যের পিঠে বসত চাবুকের কষাঘাত!
তোমাদের নীল ওড়না, তোমাদের সাদা শার্ট,
চিনে যেত আজ সকলে…!
… আমরা অবশ্যই অস্বীকার করেছিলাম
আদ্যোপান্ত।
ইতিমধ্যে আমরা বদলে নিয়েছিলাম
আমাদের প্রিয় পারফিউম ব্র্যান্ড।
আমাদের হাতের লেখা।
…তারপর তড়িঘড়ি আমাদের সভাস্থল
ত্যাগ।
তুমি দেখলে আলমারির চাবিটা পড়ে
আছে …
আর সমনটা গায়েব।
একটু মুচকি হাসলে কি?
হ্যা, তোমাকে আবার গোছাতে হবে আমাদের ব্যক্তিগত দেরাজটা।
গোপন চাবিতে বন্ধ রাখতে হবে
আমাদের সবার একান্ত গোপনীয় আলমারির
দরজা।
আমরা অবশ্যই চাইনা আমাদের ব্যক্তিগত
চিলেকোঠায়
কেউ হানা দিক পা টিপে টিপে...।
মন্তব্যসমূহ