মুজিব ইরম


মুজিব ইরম
জেলা : মৌলভীবাজার

মনুতে সাঁতার শিখে একদিন হয়ে উঠি সন্তরণশীল মাছ, স্থলে ভাসা মীন! আমাকে বৈতল করে এখনও উঠে চাঁদ বেড়ি বাঁধে, ঢোলক পাড়ায়। মহকুমা ঝেড়ে ফেলে আমাদের শহর যেদিন জেলা হয়ে ওঠে, আমিও ছেড়েছি বাড়ি, আমিও ঠিকানা লিখে নতুন জেলার নাম ভুল করে পুরনো জেলার নাম লিখে ফেলি! মনে হয়, এ-চিঠি তোমার কাছে যাবে না তো কোনো দিন হায়! আমি তো ফনিক্স সাইকেলে চড়ে আর রাফ খাতায় ঠিকানা লিখে বালেগ হয়েছি। ও ডিস্ট্রিক রোড, তোমার দুই পাড়ে পড়ে আছে বহুপাক্ষিক বিদ্যালয়ের দিন, চিঠির করুণা! একে একে বদলে যাওয়া জেলা ও শহরের নামে আমরাও কাদায় ডুবিয়ে পা উঠে আসি বাসস্টপে, শহরের পথে...মুদির দোকানে বসে বাসি দৈনিকের পাতা পড়ে আমাদেরও কিছু কিছু সাহিত্য জ্ঞান হয়...এ-শহরে ভোরের কাগজ আসে সন্ধ্যা হলে পর, আর আমি গাঁও থেকে উঠে আসা উপাসী বালক অপেক্ষার নামে বাড়ি ছাড়া হই, গোত্র ছাড়া হই!


হাম পরবাসী

হাম পরবাসী, দূর হোন্তে আসি, রহি গেলুং এহি ঠাই। দিন দুই চারি, রৈচি বাসা করি, না জানি কোন খানে যাই। رসৈয়দ সুলতান

ফলের মৌসুম এলে মনে পড়ে তোমাদের ঘাট, জলের ইশারা...তোমাদের ঘাটে এসে ভিড়ে ভাওয়াইয়া কাঁঠালের নাও জ্যৈষ্ঠ মাসী রোদে...তেরছা বৃষ্টিতে ভিজে তোমাকেই যাচনা করেছি কতো ঘাটপাড়ে আমকাঁঠালির দিনে...আর তুমি বলেছিলে হজমি খেয়েই যেন পান করি জল, তোমার নামেই সেটা জ্যৈষ্ঠমধু হবে...আজও আমি পান করি জল তোমার ইশারা বুঝে, আজও আমি ভাওয়াইয়া কাঁঠালের নাও ভিড়ে থাকি সুগন্ধি স্বভাবে...পছন্দ ছিলো না তবু দিলীপ কাটিং চুল ছেটে দিয়েছিলো যারা, আজও তারা পিছু পিছু ধাওয়া করে, জানায় সবক...আমিও ভেবেছিলাম দৌড়বিদ হবো, পৌঁছে দেবো রিলে রেইসের কাঠি, বাৎসরিক টুর্নামেন্টে জিতে নেবো সিল, তোমার প্রশ্রয়...একদা আমিও ভুলে মেঘনাদ লাইব্রেরী থেকে কিনে আনি সুখে থেকো ভুলো না আমায়...এতো এতো রঙ্গিন পাতায় চিহ্ন এঁকে রাখি...পরদেশী টিকেটে মজে না মন, তবু আমি তোমার জন্যই কিনে আনি ডাকটিকেটের খাতা, অটোগ্রাফের বই...সেই থেকে তোমার নামের রূপ লেগে থাকে এই সব পাতায় পাতায়...আমিও বানিয়েছি সিল ঠিকানা সমেত, বানিয়েছি প্যাড উপাদি বিহীন...খাতায় খাতায় কতো লিখিয়াছি নাম, দস্তখতের রূপ...ইচ্ছে ছিলো দেবো তো সাইন তোমার খাতায়...আজ অর্ধেক পথের নাও কাত হয়ে আছি পরদেশী জলে...অর্ধেক জলের নাও অর্ধেক স্থলের...হায়, কী করে তোমাকে পাই...না জানি কেমন করে কোন খানে যাই!

বসন্তবরেষু
এ-বসন্তে আমি তোমাদের বাড়ি যাবো। জানি, এখনও জবা কয় ফুটে আছে তোমার উঠানে। এই রক্তজবা জানে- কেনো আমি এই ফুলে মজে থাকি, কেনো আমি দখিনা বাতাস হয়ে ঘুরে আসি তোমাদের বাড়ি! রোদ উঠিয়াছে তোমাদের ঘাটে, আর আমি এতো এতো ফুলেদের নাম ভুল করি, এ-বসন্তে মনে রাখি অর্ধ-ফোটা জবা ফুল- তোমার আদর।

মন্তব্যসমূহ

Unknown বলেছেন…
চমৎকার কবিতার দেহ। মনে লয় এর ভিতর আমার নাম খানি লিখে দিয়েছে শৈশবে স্মৃতিতে, যৌবনের সুধায়। অতএব কবি এ তোমার সুধামৃত উষ্টোপুটে রাখি।
Unknown বলেছেন…
--------- ইকবাল হোসেন বাল্মীকি।
Samonto Sabul বলেছেন…
ajeno kobitay gera kono cutto akti ga...