অমিত কুমার বিশ্বাস


অমিত কুমার বিশ্বাস
ম্যাকবেথের বিবি

ফানুসের মতোই ফুসছে সুষুম্নাকান্ডের নিম্নদেশ
চাউনিতে নেট সার্ফিং
পুজোর বাজারে এসেও খুঁজছি নেপলা
আসলে তোমার জন্যই তো বেঁচে থাকা
ডিগবাজি রকবাজি  ইত্যাদি ইত্যাদি
সেটটপ বক্সেও আজকাল বড্ড বিরক্ত
এরকম  ছেলেমানুষি করলে কি চলে
তোমার জন্যই দেখ আজন্ম হামাগুড়ি দেওয়া
মৃত্যুর ম্যারাথনে নিশ্চত সোনার সন্ধানে
কবর খুঁড়ে নিয়ে এসেছি বাদশাহী আংটি,এই দেখ
তবু নিজের সমাধিতে  নগ্ন আত্মার সাথে
ক্রমশ খেলছি সাপলুডো
                  আজ আর বাধা দিও না ।


অন্ডকোষে লুকিয়ে রাখা প্রেমপত্রের পরিবর্তে চেয়েছ মাটির স্তনের মুখে মুখ রেখে শীতদুপুরে রোদ-পোহানো সাদা বকেদের আদর আর  পাকা ধানের ঘ্রাণের মতো  ভালোবাসা । অগত্যা  ছড়িরে দিয়েছি নিজেকেই ,পাতাখোলায় গর্ভবতী ধানের অহংকার নিয়ে,ডুবে গেছি মাটির মৌতাতে ক্রমশ ।এখানেই বড় হয় ।স্বপ্ন বা স্বপ্নের ফসল ।জোছনার ডানায় কাঁচামিঠে আগুন দেখে  আজও পাগল হওয়া ।আগুন লাগে শরীরে ।মোমের মতো গলে যাই ।আজও গোহারা হেরে গেলাম,ফ্রয়েডের পিঠে চেপে মহাকাশে ঘোরা হলনা ।বরং স্বপ্নের প্রতিবিম্ব হয়ে এগিয়ে যাই ক্রমশ তোমার ছায়ার পাশে ।তবু তুমি ওপাশ ফিরে !


ভাসমান ছুরি-সংলাপের চুম্বকত্বে অসহায় হাত দুটো বাড়িয়ে দিলাম.....রাজামশাই আমি আসছি.....ঘুমিয়ে থাকুন...আমি আসছি নিজের ঘুমকেই গলা টিপে মেরে ফেলার একটু আগে আমার মুখটা একবার চেয়ে দেখুন ....দেখুন এখনও  আমি কাঁদতে পারি পাখির মতন রাত-জোছনায় ভাঙা ভাঙা মেঘের নিচে......হৃদয়ের ভিতর বহমান রক্তনদীর শরীরে ডুবস্নানে হারিয়ে যায় আমার সাধের আংটি আর  মানবিক দস্তানা......রাজামশাই আমি আসছি.....শেষ রাতের শেকল ভেঙে হাজার পায়রা-হত্যার আনন্দে যখন  ম্লান হয়ে যাচ্ছে আমার কালো হাত  আমার প্রচ্ছায়ার মুখেও তখন বিদ্রুপের হাসি.........এখন অবিরাম আগুনের উপাখ্যানে কেবলই  আমার অনন্ত সন্তরণ ......আমি আসছি !




ভীষণ একা ভীষণ একা আমি
আর তুমিও
একাকী এই রাতে হেঁটে চলেছো অসীম পথে
কে জানতো
এভাবেই একদিন
মোমবাতির মতো ধুকতে থাকবো
আমি তুমি আর সে
শিরোস্ত্রাণ পড়ে থাকবে কবরের পাশে
বন্ধুও হাসবে মিটমিট করে
যাকে শুইয়ে রেখেছি বহু আগেই  ভালোবেসে-মন্দবেসে
এই হাতেই....
এভাবেই চলছে রথের চাকা
আগুনের ফুলকি
তলোয়ারের গোঙানী
কলমের চিৎকার
দোতারার হতাশ্বাস
কে থামাবে?
আমারে না হয় খুবলে খাবে  সময়
যা কখোনো ভাবিনি
ভাববার দরকারও হয়নি
এখন শরীরে কেবল ইঁদুরের বাসা
এখন শরীরে  কেবল মরা ছুঁচোর  ডাস্টবিন
এখন চোখে সাপের গর্ত
এখন  কান দিয়ে বেরুচ্ছে কেঁচো
আর তুমি  হাঁটছো
থামো এবারে থামো
খোলা ছাদ আমাদের
ভাসমান ছোড়াকে দেখেও ওগো বুঝিনি আমি
ফিরে এসো ফিরে এসো
রথ ,জয় বা কাব্য হয়ে নয়
নেহাত আমার  বুকে পলিমাটির মতোই ফিরে এসো
যদিও আমার আর ফেরা হবে না জানি
আমি কাপুরুষ নই
পুরুষ
ভোটাধিকারের পুরুষ
কেরোসিন লাইনের পুরুষ
ফ্রীতে চিতাকাঠ আনতে পারা পুরুষ
কন্ডোম বাঁধতে পারে এমন পুরুষ
এভাবেই
তুমি আর আমি
আমি আর তুমি
হেঁটে চলেছি হাজার বছর
তোমার হাতের মোমবাতি অকস্মাৎ নিভে যাবে জানি
হাউ হাউ করে  তখন কাঁদবোনা  তাও জানি
আধাঁর নেমে আসার আগেই তপ্ত মোম মেখে
ঝলসে নেবো নিজেদের মাংস
আর ছড়িয়ে পড়বো ধোঁয়াশার মতো

 তুমি ঘুমিয়ে থাকো ম্যাকডাফ !


এ রাতে জোনাকিরাও ঘুমোচ্ছে চুপচাপ
এরাতে সংগমে এগিয়েও পিছিয়ে গেল কারা
চলো এবারে আমরা একে অপরের শরীর ছানার  পরিবর্তে
দাড়ি কমা সেমিকোলন ঘেঁটে দেখার পরিবর্তে
চলো চলো
নিজেরাই নিজেদের খুন করে লাফাই
আর প্রকাশ্য রাজপথে চিৎকার করে বলি
 'ইউরেকা ইউরেকা'  !


সবাই ঘুমিয়ে থাকো
কেউ আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না
আমরা আমাদের হৃৎপিন্ডগুলো
লুকিয়ে রেখেছি মাটির নিচে
যেমনটি বলেছিল ওরা
আমরা হাজার হাজারকে গ্যাসচেম্বারে ঢুকিয়ে
খাওয়াবো  দুলাল চন্দ্র ভড়ের তালমিশ্রী
আর জোয়ানের গুড়ো
এভাবেই চলছে চলবে
এভাবেই কালো বা লাল হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও
এভাবেই চায়ের দোকানে দন্তবিকশিত কিছু সুখ  বা অসুখ                                                  
সবাই ঘুমিয়ে থাকো
বুলডোজার এগিয়ে যাক কাটাকুটি আর
একদান লুডো খেলার জন্য

ঋণ স্বীকারঃম্যাকবেথ/উইলিয়াম শেক্সপিয়ার

মন্তব্যসমূহ

শংকর দেবনাথ বলেছেন…
খুব ভাল লেখাগুলো