অনুদিত অণুগল্প







অনুদিত অণুগল্প:

পাওলো কোয়েলোর একটি অণুগল্প 
( মূল গল্পেও কোনো শিরোনাম নেই)

একদিন এক বাবা চেষ্টা করেছিলেন সংবাদপত্র পড়ার। কিন্তু তার ছোটো ছেলে তাঁকে বারবার বিরক্ত করছিল। শেষ অব্ধি ধৈর্য হারিয়ে তিনি কাগজ থেকে একটা পাতা বের করে সেটা টুকরো টুকরো করে ছেলের হাতে দিলেন।

নাও। এবার তুমি যা খুশি করতে পারো। আমি তোমাকে পৃথিবীর ম্যাপ দিলাম। এখন দেখতে চাই কী করে তুমি এগুলো ঠিকঠাক আগের মতো জুড়ে আনো।

তিনি আবার পড়ায় মন দিলেন। তিনি জানতেন তার ছেলের সারাদিন চলে যাবে এই কাজটা করতে।
কিন্তু মাত্র পনের মিনিটের মধ্যে তাঁর ছেলে ম্যাপ নিয়ে ফিরে এল। অবাক হয়ে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মা কি তোমায় ভূগোল পড়ান?
ছেলে বলল, ভূগোল জিনিসটা কী, তা জানি না। কিন্তু কাগজের অন্য দিকে একটা মানুষের ছবি ছিল, আমি সেগুলোকে পরপর জুড়লাম, আর দেখলাম আরেক দিকে পৃথিবীটা জুড়ে গেল।

(পুনর্মুদ্রণ //নতুন শতক/ ভাষান্তরঃ বিতস্তা ঘোষাল// সম্পাদকঃ সায়ন্তনী নাগ)

লেখিকা: লিলিয়ানা ভারেলা
দেশ: আর্হেন্তিনা
লেখক-পরিচিতি: জীববিদ্যা ও রসায়নশাস্ত্রের অধ্যাপিকা। জন্ম রাজধানী বুয়েনোস আইরেসের বেরিস্সোতে। ২০০০ সালে সাহিত্যজগতে পদার্পণ। গল্প ও কবিতা লেখেন আর্হেন্তিনা, চিলে, পেরু, একুয়াদোর, স্পেন, ব্রাসিল, অস্ট্রিয়া, ভেনেসুয়েলা ও কোলোম্বিয়ার বিভিন্ন সাহিত্যপত্রে। তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু বই: বিভিন্ন গল্প-২০০৬, অন্ধকার কবিতা, আমার লেখা-২০০৮, না-ঘুমপাড়ানিয়া গল্প ইত্যাদি। ১৮টি স্প্যানিশভাষী দেশের কবিদের সাথে সম্পাদনা করেন 'সূর্যের কথা' নামের আন্তর্জাতিক পত্রিকা। রাদিও আরিন্ফোয় 'আল বোর্দে দে লা পালাব্রা' অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা, অন্য দেশের কবিদের কবিতা পাঠ করেন এই অনুষ্ঠানে। শিকাগোর কসমস রেডিওর 'ভোসেস দেল সুর' অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা ২০১২ থেকে।
অনুবাদক: মৈনাক আদক



তাড়না ( মূল গল্প: ইমপুলসো )

ওরা কিছুতেই নিজেদের সংযত করতে পারল না। এক আত্মঘাতী বাদলা বিকালে রাস্তায় পড়ে রইল ওদের পদদলিত দেহাবশেষ।




কণ্ঠস্বর শুনতে হলে ( মূল গল্প: ওইর লা ভোস )

সত্যিটা কিভাবে স্বীকার করতে হয়। অন্তর্বেদনার ভারে ভেঙেচুরে যায় তার হাড়পাঁজরা, কেননা তার মনে হচ্ছিল সে আর আগের মতো নেই। আজ সে শুধু একজন মহিলার প্রতিফলন দেখছিল আয়নায়, নিজেকে দেখে তার ঘেন্না হচ্ছিল।
জলের ঢেউ হতাশায় চাটছিল মেয়েটার দু পায়ে লেগে থাকা বীর্যের অবশিষ্টাংশ যতক্ষণ না সে শুনতে পাচ্ছিল তার মায়ের আকুল কণ্ঠস্বর।
জলীয় শীতলতা সে অনুভবই করেনি, মাকে খুঁজতেই ব্যস্ত ছিল। অপরাধবোধের অশ্রু এবং অ্যালকোহলে নিমজ্জিত তার বাবার নাক ডাকার আওয়াজও পৌছয়নি তার কাছে।

* দুটি অণুগল্পই না-ঘুমপাড়ানীয়া গল্প ( ২০০৮ ) বইয়ে সংকলিত।

মন্তব্যসমূহ

নাজনীন খলিল বলেছেন…
দুইটা গল্পই অসাধারণ ।

দ্বিতীয় গল্পটা পড়ে নির্বাক।