যেতে হয়। কেউ কেউ যায় জানান দিয়েই। কোন দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগতে ভুগতে। সুন্দর এই বেঁচে থাকাকে প্রাণপনে আঁকড়ে থাকতে চেয়েও থাকতে পারে না। আর কেউ যায় একেবারেই আকস্মিক,অচিন্ত্যনীয় যাত্রায়। যেভাবেই হোক সব যাত্রাই চারপাশের চেনাজানা পরিমন্ডলে এক গভীর ছাপ রেখে যায়। আমরা আমাদের প্রিয় মানুষগুলোকে হারাতে চাইনা কিছুতেই।
চলে গেলেন নবারুণ মাত্র ৬৬ বৎসর বয়সেই। দুরারোগ্য কর্কট তাঁকে ছিনিয়ে নিল জীবনের কাছ থেকে।আমাদের কাছ থেকে।
প্রথিতযশা সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী এবং বিজন ভট্টাচার্যের সফল উত্তরসুরী। জন্ম ১৯৪৮ সালের ২৩ জুন। ১৯৯৩ সালে আকাদেমী পুরস্কার পান 'হারবার্ট' উপন্যাসের জন্য।
এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না, কাঙাল মালসাট, লুব্ধক,হালালঝান্ডা এবং অন্যান্য,মহাজনের আয়না, ফ্যাতাড়ু, রাতের সার্কাস এবং আনাড়ির নারীজ্ঞান—তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ।
‘এই মৃত্য উপত্যকা আমার দেশ না' তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ বিপুল সমাদৃত পাঠক মহলে।
আমার বিনাশ নেই-
বছর বছর মাটির মধ্য হতে সবুজ আশ্বাস হয়ে ফিরে আসব
আমার বিনাশ নেই-
সুখে থাকব, দুঃখে থাকব সন্তান-জন্মে সৎকারে
বাংলাদেশ যতদিন থাকবে ততদিন
মানুষ যতদিন থাকবে ততদিন।
‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না' যতবার এই কবিতা পড়েছি এবং শুনেছি আমার মানসে ভেসে উঠেছে মহাশ্বেতা দেবীর ‘হাজার চুরাশির মা’-এর ছবি। আমি নবারুণের মাঝে একসাথে দেখেছি মা মহাশ্বেতা এবং ছেলে নরারুণের যৌথ উচ্চারণের এক অনবদ্য যুগলবন্দি ।
'বাংলাদেশ যতদিন থাকবে
মানুষ যতদিন থাকবে ততদিন’
নবারুণ চলে গিয়েও থাকবেন। আমাদের মাঝে । বাংলাদেশের নিঃশ্বাসের মাঝে।
মন্তব্যসমূহ