এবং নজরুলঃ১// ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়

    এবং নজরুলঃ১                   ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়
                                                 গানের নজরুল

পেরিয়ে এলাম জৈষ্ঠের ঝড় কাজী নজরুল ইসলামের ১১৫তম জন্মদিন । কি ভাবে মনে রেখেছি নজরুলকে কিংবা আদৌ মনে রেখেছি কিনা তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্ন আমাদের থাকতেই পারে কিন্তু একটা উচ্চারণে বোধকরি কোনো ভুল নেই যে বাঙালির – অন্নদা শঙ্কর রায়ের অমর পংক্তি “আর সবই ভাগ হয়ে গেছে শুধু, ভাগ হয়নিকো নজরুল” । পণ্যায়নের সর্বব্যাপী থাবার নিচে নজরুল-সৃষ্টি ততটা আলোচিত নয় এই প্রজন্মের কাছে । পাড়ায় পাড়ায় নজরুল জয়ন্তী পালন বন্ধ হয়েছে অনেকদিন, নজরুলের গানেও দীক্ষিত হচ্ছেন না একালের সংগীত শিল্পীরা । এই সবই সত্যি । আবার এটাও সত্যি রবীন্দ্রনাথ নামক মহাসাগরের পর বাঙালির সাহিত্য-সংগীত-সংস্কৃতির সৃষ্টিভুমিতে নজরুল ছাড়া আর কাকেই বা পেলাম ! রবীন্দ্রনাথ চলে গেছেন একচল্লিশের ৭ই অগস্ট, আর নজরুলের অসুস্থতার প্রাথমিক লক্ষণ ধরা পড়ে ঐ দিন থেকেই । নজরুলের কবিতার কথা নাহয় বাদই দিলাম । কিন্তু নজরুলের বাকরুদ্ধ হওয়ার তিয়াত্তর বছর পরেও অন্তত বাংলা গানের ক্ষেত্রে নজরুলকে সরিয়ে দেবার মত কাউকেই তো পেলামনা !

বস্তুত গানের নজরুল এক বিস্ময়কর প্রতিভা । কাব্যের নজরুলের নির্মোহ আলোচনা কম হয়নি । রবীন্দ্র-উত্তর যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আধুনিক কবি জীবনানন্দ দাস মনে করেছিলেন, “তাঁর কবিতা চমৎকার কিন্তু মানোত্তীর্ণ নয়” । অবশ্য একথাও জীবনানন্দ বলেছিলেন যে “... এরকম পরিবেশে হয়তো শ্রেষ্ঠ কবিতা জন্মায় না কিংবা জন্মায়, কিন্তু মনন প্রতিভা ও অনুশীলিত সুস্থিরতার প্রয়োজন । নজরুলের তা ছিল না” । নির্ভুল মূল্যায়ন । শৈশব থেকে দারিদ্রের মুখোমুখি হয়ে মাত্র ৯বছর বয়সে পিতৃহারা নজরুল তাঁর বহুমুখী সৃজনশীলতা পাখনা মেলার মতো আকাশের সন্ধান পেলেন না । ১৯১৯ থেকে ১৯২৮ - নজরুলের কাব্যজীবনের এই ৯ বছরের সময়কালেও কবেই বা সুস্থিতি পেয়েছিলেন তিনি ! করাচির সেনানিবাসের পাট চুকিয়ে ফিরে এলেন ২০বছর বয়সে, দেশ তখন উত্তাল । সদ্যগঠিত কম্যুনিষ্ট পার্টির সংঠন, কৃষক সমিতি, সাংবাদিকতা, স্থায়ী থাকার জায়গা নেই, উপার্জনের ব্যাবস্থা নেই । কাব্যসাধনার জন্য সুস্থিতি পাবেন কি করে ? এর সঙ্গে ছিল পত্রিকা সম্পাদনার ধকল, মৌলবাদী হিন্দু – মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের আক্রমণ, কারা বরণ । তথাপি বিস্ময়কর এই যে কি অমিত ঐশ্বর্য দান করে গিয়েছেন সেদিনের তরুণ প্রজন্মের কাছে । দেশ ও সমাজ প্রেম তাঁর কাব্যে মুক্তকন্ঠ সুস্পষ্টতা পেয়েছিল । সমবয়সী ভিন্ন ধারার কবি জীবনানন্দ দাস যেমন বলেছিলেন “ভাষা,ভাব বিশ্বাসের আশ্চর্য যৌবন রয়েছে এই কবিতাগুলির ভিতর”।
             সুস্থিত হলেন তখন যখন তিনি ‘গানের নজরুল’ । গান তিনি ছেলেবেলা থেকেই গাইতেন, সুর করতেন । ১৯২০তে করাচির সেনানিবাস থেকে ফিরে আসার পর গান শুনিয়েই জয় করে নিয়েছিলেন কলকাতার বিদগ্ধ মহলকে । সভা-সমিতি কিংবা ঘরোরা সাহিত্য আড্ডায় তাঁর গানই থাকতো প্রবল আকর্ষণের কেন্দ্রে । নানান বিদগ্ধজনের স্মৃতিকথায় নজরুলের আপনভোলা গানপাগল মূর্তিটির ছবি লেখা আছে । মুজফফর আহমেদ লিখেছেন ‘কারখানার শ্রমিকরা পর্যন্ত ডেকে নিয়ে যেতেন নজরুলকে’। বুদ্ধদেব বসু তাঁর স্মৃতিচারণে জানিয়েছেন ‘নজরুল যে ঘরে ঢুকতেন সে ঘরের সবাই ঘড়ি দেখতে ভুলে যেতেন’ । অথচ প্রথাগত কোনো সংগীত শিক্ষা তাঁর ছিল না । বাল্যেই পিতৃহারা, লেটোর দলে গান গাওয়া, পাঊরুটির কারখানায় কাজ করা কিংবা রেলের গার্ড সাহেবের ঘরে ফরমাস খাটা নজরুলের সামনে সে সুযোগ আসেনি । যেমন ছিলনা তাঁর কোনো প্রথাগত ছাত্রজীবন । লেটোর দলে ঘুরে বেড়ানো বাউন্ডুলে নজরুল বাংলার মাটি থেকে তামাম লৌকিক সুর আত্মস্থ করেছিলেন । কিন্তু তাঁর সাংগীতিক প্রতিভার পটভুমি কীভাবে নির্মিত হয়েছিল তার কোনো লেখাজোখা নেই । নজরুল স্মৃতির সবচেয়ে বিশ্বাস্য সূত্র মুজফফর আহমেদ তাঁর স্মৃতিকথায় জানিয়েছেন যে কলকাতায় আসার পর রবীন্দ্রসংগীতই তাঁর পরিবেশনের শীর্ষস্থানে থাকত । তিনি নজরুলকে ‘রবীন্দ্র সংগীতের হাফেজ’ বলতেন । চুরুলিয়ার বাউন্ডুলে কৈশোর জীবনে কিংবা করাচির সেনা নিবাসে রবীন্দ্রনাথের গান কী করে আয়ত্ব করেছিলেন নজরুল, এ বড় বিস্ময় ! বাল্য ও কৈশোরে শুধু লেটোর দলের গানই নয়,কবিগান, ঢপ, কীর্তন, আখড়াই, ভাদু, মনসার গান,কাওয়ালি,ঝুমুর, পাঁচালি ইত্যাদি লোক আঙ্গিকের গান তিনি আত্মস্থ করেছিলেন যা পরবর্তী সময়ে ‘গানের নজরুল’কে নির্মাণ করেছিল ।

                ১৯২৮এ নজরুল কাব্যজগৎ থেকে স্বেচ্ছা-নির্বাসন নিয়ে চলে এলেন গানের ভুবনে । গ্রামফোন কোম্পানীর মাসমাইনের গীতিকার – সুরকার-কম্পোজার-ট্রেনার সব দায়িত্ব । গ্রামফোন কোম্পানীর বাংলা গান রেকর্ডিংএর প্রধান । ১৯৩৩এ প্রকাশিত রুবাইৎ-ই-ওমর খৈয়াম’ গ্রন্থের ভুমিকায় নজরুল জানালেন “ কাব্যলোকের গুলিস্তান থেকে সংগীতলোকের রাগিনী দ্বীপে আমার নির্বাসন হয়ে গেছে” । সংগীতের সবক’টি বিভাগই নজরুলের জাদু স্পর্শের ঐশ্বর্য পেয়েছিল । নানান বাদ্যযন্ত্রের পারদর্শিতা, গান গাওয়া, গান লেখা, সুর করা, থিয়েটার ও সিনেমার সংগীত পরিচালনা এমনকি একটি সিনেমায় ভক্ত ধ্রুব চরিত্রে অভিনয়ও করেছিলেন । মাত্র এগারো বছরের সাংগীতিক জীবনে অবিশ্বাস্য তিনহাজারেরও বেশি গান লিখেছিলেন আর তাঁর গানের রেকর্ডের সংখ্যা ১৭০০ । রাগাশ্রয়ী আধুনিক গান, প্রেম সংগীত, ছোটদের গান, কীর্তন, আগমণি, শামা সংগীত, গজল, কাওয়ালি, ইসলামি গান – সব ধরণের গান ।
                 একথা বললে অতিউক্তি হবে না যে, নজরুলের সাংগীতিক প্রতিভাকে ভর করেই গ্রামফোন কোম্পানী বাংলা গানের বিপণন ব্যবসাকে প্রথম পোক্ত করতে পেরেছিল । এদেশে প্রথম গান শোনার যন্ত্র বা কলেরগান আসে ১৯০০ সাল নাগাদ এবং ১৯০২এ প্রথম বাংলা গানের রেকর্ড হয় তখনকার থিয়েটার দলে সখীর নাচের দলের দুই বালিকাকে দিয়ে । পরিশীলিত গায়ন রুচি তৈরি হতে লেগে গেছে আরো বিশ/পঁচিশ বছর । তখন বাংলা গান বলতে কিছু রাগাশ্রয়ী গান, চটুল দেহতত্বের গান, কীর্তন,ভজন ইত্যাদি । বাঙালির গান শোনার কান সবে তৈরি হতে শুরু করেছে । কলকাতা বেতার ব্যবস্থা সবে শুরু হয়েছে ১৯২৭এর ১৬ই অগস্ট, বাংলা চলচ্চিত্র তখনও নির্বাক । ঠিক এই সময়েই অসামান্য সাঙ্গীতিক প্রতিভা নজরুলকে ‘শিকার’ করল গ্রামফোন কোম্পানী । নজরুলেরও স্থায়ী উপার্জনের প্রয়োজন ছিল। কলের গানের বণিক নিংড়ে নিল নজরুলকে । সেই সময় নজরুলের লেখা এবং তাঁর প্রশিক্ষণে গান রেকর্ড করার জন্য লাইন পড়ে যেতো, কারণ তাঁর রচনা ও সুর মানেই ছিল সেই শিল্পীর অবধারিত সাফল্য ও লোকপ্রিয়তা । তিরিশের দশকে সেকালের প্র্মুখ শিল্পীরা – আঙ্গুরবালা, ইন্দুবালা, কমলা ঝরিয়া,কাশেম মল্লিক,আব্বাসউদ্দীন, যুথিকা রায়, মৃণালকান্তি ঘোষচ,ধীরেন দাস, ফিরোজা বেগম, সুপ্রভা সরকার এবং আরো অনেকেই নজরুল গানের সার্থক শিল্পী রূপে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলেন ।  এঁরা সকলেই নজরুলের প্রশিক্ষণে গ্রামফোনে গান গেয়েছেন ।  বস্তুত রবীন্দ্রগানের বাইরে আধুনিক বাংলা রেকর্ডের গানে কাব্যের লাবণ্য ও পরিশীলিত গায়ন ভঙ্গি প্রথম নিয়ে এসেছিলেন নজরুলই । চল্লিশ থেকে ষাট দশক যে পর্যন্ত সময়কালকে আমরা বলি বাংলা গানের স্বর্ণযুগ । সেই স্বর্ণযুগের গানের জলসায় তিনি নেই । কিন্তু সংশয়ের যায়গা নেই এই স্বর্ণযুগের প্রস্তুতিপর্ব সারা হয়েছিল নজরুলের হাতেই ।
রবীন্দ্রনাথ নিজের গানের ভবিষ্যৎ দেখেছিলেন – বলেছিলেন ‘বাঙালিকে সুখে দুঃখে আমার গানই গাইবে, এগান তাদের গাইতেই হবে’ । নজরুলও তেমনই আত্মপ্রত্যয়ী ছিলেন । ১৯৩১-এ  জনসাহিত্য সংসদের অধিবেশনের ভাষণে নজরুল আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গে বলেছিলেন “সাহিত্যে দান আমার কতটুকু তা আমার জানা নেই, তবে এটুকু মনে আছে, সংগীতে আমি কিছু দিতে পেরেছি । সংগীতে যা দিয়েছি সে সম্বন্ধে আজ কোন আলোচনা না হলেও ভবিষ্যতে যখন আলোচনা হবে তখন আমার কথা সবাই মনে করবেন – এ বিশ্বাস আমার আছে” । রবীন্দ্রনাথের গানের কথা ও সুর সংরক্ষণের বন্দোবস্ত ছিল , শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতীর প্রয়াসে রবীন্দ্রনাথের গান পেয়েছে এক প্রাতিষ্ঠানিক রূপ কিন্তু নজরুলের গানের ক্ষেত্রে তা হয়নি । নজরুলের বহু গানের কথা ও সুর হারিয়ে গেছে, অনেক নজরুল ভক্ত তাঁর গানকে নিজের গান বলেও চালিয়ে দিয়েছেন একথাও শোনা যায় । নজরুলের অনভিজাত দিলখোলা জীবন যাপনই এরকম সুযোগ করে দিয়েছিল । দু খিলি জর্দাপান খাইয়েই নাকি গান লিখিয়ে নেওয়া যেত তাঁকে দিয়ে ।
          গানের জগতে নজরুল ছিলেন মাত্র বারো বছর, আর এই অল্প সময়কালেই, বিপণনযোগ্য বাংলা গানের ভুবনকে শাসন করেছেন, ধারে কাছে কেউ ছিলেন না । রবীন্দ্রনাথও নয় । সত্য বটে, নজরুলের গানে রবীন্দ্রনাথের গানের মত আলোক সামান্য নান্দনিক স্পর্শ ছিল না । তাঁর গান ছিল স্বতস্ফূর্ত, সরল, আবেদনে প্রত্যক্ষ আর তাই শিক্ষিত, আশিক্ষিত সকলকেই স্পর্শ করে তাঁর গান । আধুনিক বাংলাগানের ক্ষেত্রে নজরুল জনপ্রিয়তার শিখরে উঠলেন আর এই সূত্রেই বাংলার বিদগ্ধ মহল ও তাঁর কবি বন্ধুদের কাছ থেকে পেলেন উপেক্ষা । তাঁরা অনেকেই দূরে সরে গেলেন । গ্রামফোন কোম্পানীর বেতনভোগী চাকুরে, বণিক কোম্পানীর নির্দেশমত হালকা চটুল গানের নির্মাণও তাকে করতে হয়েছিল পেটের দায়ে । বাংলা সংগীতের ভান্ডারকে নজরুল ঐশ্বর্যমন্ডিত করেছেন, কিন্তু গ্রামফোন কোম্পানীর বানিজ্যিক স্বার্থ মেটাতে গিয়ে কম মূল্য চোকাতে হয়নি নজরুলকে । সেই মূল্য তাঁর সমাজসচেতন গণমুখী কাব্যচেতনার সঙ্গে চির বিচ্ছেদ । ইসলামী গান, বাংলা গজল গানের জন্য বিরূপ হয়েছিলেন হিন্দুরা, তাঁর কবিবন্ধুরা আর শ্যামা সংগীত গান রচনার জন্য বিধর্মী আখ্যা পেয়েছিলেন মৌলবাদী মুসলিমদের কাছ থেকে । গানের নজরুলের কাছ থেকে তাঁর বন্ধুদের দূরে সরে যাওয়া বা রেকর্ড কোম্পানীর দাসত্ব মেনে নেওয়া নজরুলকে গ্লানিবোধে আক্রান্ত ও বিষাদগ্রস্ত করেছিল সেকথাও আমরা জানি । রবীন্দ্রনাথকে লেখা একটি পত্রে নজরুল লিখেছিলেন “গুরুদেব, বহুদিন আপনার শ্রীচরণ দর্শন করিনি । আমার ওপর হয়তো প্রসন্ন কাব্যলক্ষী হিজ মাস্টার্স ভয়সের কুকুরের ভয়ে আমাকে ত্যাগ করেছেন । কাজেই সাহিত্যের আসর থেকে আমি প্রায় স্বেচ্ছানির্বাসন নিয়েছি । ... আমার এক নির্ভিক বন্ধু আমাকে উল্লেখ করে একবার বলেছিলেন যাকে বিলিতি কুকুরে কামড়েছে তাকে আমাদের মাঝে নিতে ভয় হয় । সত্যি ভয় হবারই কথা, তবু কুকুরে কামড়ালে লোকে নাকি ক্ষিপ্ত হয়ে অন্যকে কামড়াবার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে । আমার কিন্তু সে শক্তি নেই, আমি হয়ে গেছি বীষ জর্জরিত নির্জীব” । (সূত্র – ‘অঞ্জলী লহ মোর সংগীতে’ / অরুণ কুমার বসু , ‘পুরশ্রী’ পত্রিকা, জুলাই ১৯৯৯ ) । আর্থিক অসাচ্ছল্য, পুত্র বুলবুলের অকাল মৃত্যু, নিকটজন ও কবিবন্ধুদের দূরে সরে যাওয়া, স্ত্রী প্রমিলার পক্ষাঘাতে শয্যাশায়ী হয়ে পড়া নজরুলকে ভেতরে ভেতরে ক্লান্ত, বিষাদগ্রস্ত করেছিল । কিন্তু সেই ক্লান্তি, বিষাদের বিন্দুমাত্র ছায়াপাত তাঁর সংগীত সৃষ্টিতে পড়েনি । শুধু অফুরন্ত দিয়ে গেছেন বাংলা গানের ভান্ডারে । ভেতরের ক্ষয় গোপন করে শুধু রাশি রাশি দিয়ে গেছেন ।
             গ্রামফোন রেকর্ডের গান নিশ্চিতভাবেই ‘গানের নজরুলের’ সামগ্রিক পরিচয় নয় । তাঁর জাগরণের গান, যৌবনের গান প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে প্রবাদের মতো হয়ে আছে । সেখানে আজও তাঁর আসন অটল । নজরুলের সচেতন সৃষ্টির সময়কালই তো মাত্র ২১বছরের – ১৯২০ থেকে ১৮৪১ । ১৯৪২এর অগস্ট-সেপ্টেম্বর থেকে তিনি যখন বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন তখন তাঁর বয়স সবে বিয়াল্লিশ । ফুলের জলসায় নীরব কবি বেঁচেছিলেন আরো ৩৫ বছর । ১৯৭৬এর ২৯শে অগস্ট নজরুলের দেহাবসান হয় । সে তো তাঁর দেহের মৃত্যু নজরুল ইসলাম বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন মৃত্যুঞ্জয়ী বীরের মর্যাদায় । প্রয়াত কবি দিনেশ দাসের একটি কবিতা স্মরণ করে প্রণাম জানাই এই মৃত্যুঞ্জয়ী বীরকে -
“পঁচিশে বৈশাখে রবি
বাজাল আলোর শঙ্খ,
এঁকেছিল আকাশেতে উজ্বল সোনালি রেখা
বহ্ণির বলয় ।

এগারোই জ্যৈষ্ঠে সেই আগুন-হলুদ রঙ
হঠাত তাম্রাভ হ’ল
প্রচন্ড উত্তাপ তার – সাক্ষাৎ প্রলয়
অনির্বাণ শিখা লেলিহান
এর যদি নাম কিছু থাকে –
এরই নাম নজরুল ইসলাম” ।।
------------------------------------------------------------------------
এই সংখ্যায় মোট ষাটটি পাতা আছে। এই পাতার শেষে পিন্টু রহমানের গল্প পর্যন্ত লিংক দেখা যাচ্ছে। বাকিটা কেন নয় সেটা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। হয়তো কোনো প্রযুক্তিগত সমস্যা। যাই হোক , আপনাদের অনুরোধ করি একটু কষ্ট করে ' পুরাতন পাতাসমূহ' -এ ক্লিক করে পরের পাতায় যান। সূচির সব  লেখাই আছে।      

মন্তব্যসমূহ