প্রিয় পাঠ

প্রিয় পাঠ
সহজ পাঠ 
উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়
ছাতিমতলা ১৯৯২

                                                 স্নায়ুরঞ্জন দস্তিদার

                                                পুনরপি সহজপাঠ
                                            
               'কবির একথা  জানা উচিত নয় যে তিনি কি জানেন এবং বলা উচিত নয় যে তিনি কি বলছেন , তাই পাঠকেরও ঠিক তাই-ই পড়া উচিত নয় যা তিনি পড়েন।' (রজার পুল/ হ্যারল্ড ব্লুমের 'দ্য ব্রেকিং অফ ফর্ম' রচনায় উদ্ধৃত অনুচ্ছেদ থেকে) ।
অতঃপর এক অন্যমনস্ক পাঠকের খলবলে চিন্তার নাড়ি ও নক্ষত্র প্রদর্শন প্রদত্ত হল এমন এক ভাষাজগত যার চিহ্ন সমগ্রের উপাদান নষ্টদাম্পত্য , যৌনতা পীড়িত উদাসীনতা আর শব্দের স্বাভাবিক কবিতা হয়ে ওঠাকে আশ্চর্য প্রতিজ্ঞায় ধ্বংস করে দেওয়ার প্রবণতা। আর এই মশলা দিয়েই রান্না করতে হবে সমকালে প্রবাসী যাবতীয়  ত্রৈকালিক ভাষ্য ডিশ । প্রদত্ত হল যা কিছু তার বিকল্প কোনো ভাষাজগত নেই 'সহজ পাঠ' এর ব্রহ্মান্ডে। অতএব  দুনিয়ার যাবতীয় কহতব্য কিছুর সঙ্গে যোগাযোগের উপকরণ ব্যাস এতটুকু। এ এক জান্তব কাঠামোর ভিতর কিয়ৎকাল সৌখিন অজ্ঞাতবাস নয় বরং সমস্থ শ্রম দিয়ে জ্বালানো অন্তরীণ এক সাধনার জগত , যার  স্বরগ্রামে অটোগ্রাফ দিতে দিতে  লিখে চলেছেন উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় ।
              প্রশ্ন উঠতে পারে , কেন এই 'সিনট্যাক্স ' নির্মাণ ? চয়নের কি কোনো বিকল্প ছিল না এই চটুল কথায়ন ছাড়া? এ প্রশ্ন তারাই করবেন লা-লাঙ্ এর ভাষা প্রক্রিয়ক  ব্যাখ্যা যাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় । সমসময়ের কবিতার জগতে যদি কোনো তথাকথিত ফুসফুস থাকে তার অন্তরীণতায় গিয়ে খুঁজলে পাওয়া যাবে একজন উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় তথাকথিত শুদ্ধায়নবাদী ক্লাসিকাল। মধ্যবিত্তপনার ভন্ডামির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে অনন্ত সিগারেট টানছে। এই দ্রোহ থেকেই সু-পরিকল্পিত স্বাভাবিক এই না-কবিতা ভাষ্য , যার মধ্যে অপচেষ্টার স্রোত বহে যায় কবিতাকে নষ্ট করার , শেষাবধি কবিতার কবিতায় মিশে যায় স্মার্টনেস । আর এইসব কবিতার শরীরখানি হাট খোলা থাকে 'উত্তরণ ' ক্লান্ত ভাষার জগতে ।বাবারে কী কষ্ট করে ভাষাকে শুদ্ধ রাখতে হয়! কেউ বুঝতে পারে না কফি হাউসের প্রতীকী টেবিলগুলিতে বসে শ্মশ্রুগুম্ফধারী রামগরুর সন্তানদের মতন , যাহারা বুঝিয়াছেন জগতের কঠিনতম সঙ্কটের সমাধানকল্পে তারাই 'বিধি' কতৃক নির্বাচিত সৈনিক। অতএব গাম্ভীর্য বজায় না রাখিলে যদি সঙ্কটও সঙ্কটাপন্ন হইয়া ভুস করিয়া মিলাইয়া যায়।
উপরিতলে 'এ বাবা! কি লিকেচে মাইরি!' গোছের সমালোচনা অতিক্রান্ত হওয়ার পর এই সব টুকরো ভাষ্য  স্পর্শ করবে  জাগতিক যাবতীয় চৈতন্য রাজনীতির  ধ্বংসাবশেষ ; তার স্মার্টনেস  যে তথাকথিত ভাষাগত ঢপ নয় , তা প্রমাণিত হয়ে যায় যখন ভাষ্যকার পেয়ারাগন্ধী  নপুংসক উদাসীনতা নব্য মার্কসবাদে ধুয়ে দিতে চান গতিস্মান সময়কালকে । তখন 'পুরুষহীনতা' তার অঙ্গবৈকল্যের  মাত্রা পার করে হেঁটে যায় মিথাক্ত 'নিরপেক্ষতা'র  সন্ধানে, দায়িত্ব  বোধান্তরে ।
            উত্তর কলোনির জীবনযাত্রায় বিশ্বায়িত শব্দজগতের চটুল ভাষাজগত নির্মাণে গভীর আয়াসী কবি আড়ালে আবডালে সিরিয়াসতম কথক । কবিতা হয়ে ওঠার তথাকথিত  তাড়াহীন বুদবুদ ভাসানো এক প্রতীক ভাষ্য , তারপর চিহ্নের অমায় খনির অন্ধকারে নীরবরত চলমান কিছু বিশ্বাস ও মূল্যবোধের অন্বেষণজনিত হাহাকার , এই সব আর কি!
        ভাষ্যকারের রাজনৈতিক দাবীর কাছে সনাতনী মার্কসবাদ চিন্তিত হতে হয় । সমস্যান্তরে যেতে যেতে যেভাবে  তত্ত্বায়িত করে তোলবার লোভ কবিতাবাস্তবকে সামলে উঠতে হয় তা এক দার্শনিক চ্যালেঞ্জ । 'পরিবর্তিত পরিস্থিতি' মানে ঠিক কতখানি , যতটা এক সাথে হাঁটতে পারে ত্রিমাত্রিক বাস্তবতা কবিতা-জীবন-তত্ত্ব । ইয়ার্কি প্রতিম বাক্য নির্মিতিতে বঙ্কিম  উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের 'সহজপাঠ' এক দুরূহতম পাঠ আশা করে বসে থাকে অবিরাম।

 আসলে পাঠকের ঠিক তাই-ই পড়া উচিত নয় যা তিনি পড়ছেন। মাকড়শার জালের ভিতর থেকে ভাষ্যকার কিছু কিছু ইঙ্গিত করেন , নিরন্তর সংকেত প্রবাহ , ভেসে যায় চরাচরব্যপ্ত অন্ধকারে , পাঠকের তাই আঁকড়ে বাঁকড়ে ধরা উচিত পতনশীল কিছু কিছু ক্লান্ত গ্যাস বেলুন।


উপক্রমণিকা

সম্ভব হ'ত যদি চতুর্দোলা আনতাম
আমোদ করতাম এমন
যাকে বলে রোশনাই
আলোর অর্থে আলো যাকে দেখে লেখা হয় অর্থপুস্তকে

কিন্তু কি করব
সমস্তই চুরি হয়ে গেল যে
ছাতা ব্যাগ বইপত্র, এমনকি ফরাসী সরলতাটুকুও
ভেবে তো ছিলাম তোমাকে বসাব অই সারল্যকেদারায়

কিছু নেই
আছে শুধু ঢপের এ  স্মার্টনেসটুকু।

মেঘদূত
পয়োধর জোরে যাও, বলো তাকে শ্রাবণের গান
সে যেন  এলায় কেশ যুথীমালা না দোলায় , না বাঁধে রিবন
সে যেন আমার তরে বসে থাকে বেলা না ফুরায়
সে যেন আমার চিত্রে ফেলে থুতু , অন্যেরে পেতে দেয় গা

তার ভুরু কৃশ করে বিউটিপার্লারে , সপ্তাহে দুইবার মুখে দুধ পাতিলেবু
নখগুলি দীর্ঘ ও রঙিন , দিক সে দিক  বিঁধিয়ে নখ ঐ নায়কের পিঠে
শক্ত মণিবন্ধে যার আধুনিক ঘড়ি , গোলাকার
তার পিঠে নখরক্ষত মানাবে, মানাবেই

নায়কের কব্জি মাংসে ভরপুর, বিজ্ঞাপনের দ্যুতি আছে
আমার বাহুতে নেই অতো  চেষ্টায় আছি তাকে বিজ্ঞাপন
                                                  যোগ্যতা দিতে

আজ আমার দিন নয় , ওর দিন
ওর সাহস রয়েছে সবকিছু তলিয়ে দেখার
আজ খুব বৃষ্টি পড়ছে আমার নেই কোনো ওয়াটারপ্রুফ

বলি তাই  পয়োধরে তার কাছে নিয়ে যাও শ্রাবণের গান
কেউ যদি না করে, মেঘ তুমি ক'রো প্রিয় অঙ্গসংবাহন।

আই লাভ ইউ

নিবিষ্ট মনে ম্যাজিক দেখছিলে তাই তোমাকে ডাকলাম না
শরীর বেয়ে হলকা উঠে গিয়েছিল তোমার বেণী দেখতে পেয়ে
কোঁকড়া-চুলে বাঁধা বিনুনি যেন যৌনতাকে গুছিয়ে রেখেছে
অনবরত তখন বুকের মধ্যে বাজ পড়ছে তখন ম্যাজিক চলছিলো

অম্নি দেখি তোমার প্রেমিক আঠারো হাত দূরে
আমি পালটি খেয়ে মহৎ হলাম-প্রেমের লেসার ফিরিয়ে নিলাম
তার মনেও তো কষ্ট হবে এই পুজোর দিনে
যদি আমি নিকটে যাই, দুই আঙুলের মুদ্রায় বলি
আই লাভ ইউ আই লাভ ইউ

তার মনে যে কষ্ট হবে , পুজোর দিনে তা কি ভালো
তুমিও বিরিক্ত হবে, প্রত্যাখ্যানের সাহস হবে না
আমার লেখা নোটস্ পড়ে তুমি একশোতে ছাপ্পান্ন পেলে

সরলরেখার ভান করে থাকি বক্রের দিকে তাকাবোই না
পেয়েরা গাছের নীচে বসে পড়ি অমর গ্রন্থ দাস কাপিটাল।

চাহিদার ধরণ

খুব ফুটফুটে চাই না তবে যেন মন হেসে ওঠে
হাতে হাত ঠেকলেই

খুব ফটফটে চাই না , ননদজ্বালানী , তবে যেন
কলহে অংশ  নেয় প্রয়োজন মত

বাবা আর কি বা দেবে ? রঙিন বেলুন দিক, সাদা মোমবাতি
ফুলদানে পুষ্পভার ফুলশয্যারাতে

বিবাহ, বাঙলাদেশে , জানবে মরণকামড় , হয় সে কামড়াবে নয় তুমি
সুতরাং দাঁত ঘষে রাখছে দুজনেই

ভালোবাসাবাসি ভাল্লাগে না আর , মালাবদলের পর
করব  গার্হস্ত প্রেম , যাকে বলে মরীচিকা

বিয়ে করলে এতদিনে এক গণ্ডা পুড়িয়ে মারা হয়ে যেত।



গুরুবাদ

পিরিতি রহিয়া গেল অন্তরে আমার। অন্তর বললে তো
স্থূল কিছু বোঝাবে না, হৃদয় বললে আবার মেয়েরা ধমকাবে
হৃৎপিন্ড বললে অবুঝ বিজ্ঞান খুশি হবে , তাই হোক
পিরিতি রহিয়া গেল হৃৎপিণ্ড -নিলয়ে। অলিন্দ ও নিলয় দ্বারা
হৃৎপিণ্ড অতি সুগঠিত।

আমি রহস্যের পক্ষে নেই কারণ রহস্য ধারণা-বিশেষ। ধারণার বিরুদ্ধে
আমি যেমন শান্তি দুঃখ, আর্থিক প্রগতি। চোখে দাঁতে বুঝি
এ জগৎ বলতে বুঝি দুই যৌনযন্ত্রের মধ্যে পোস্টকার্ড বিনিময়।

এই মতাবলম্বী হয়ে কি করে সামলাবো এই বাস্তব প্রণয়ের পিণ্ডটিকে
একটি বাস্তব আধার ছাড়া? হৃদযন্ত্রের চারটি খোপ । যে কোনো একটিতে
রাখি তাকে যে বিন্দু হার্টএটাকের সম্ভাবনায় ভরে আছে। অলিন্দ ও নিলয় দ্বারা
হৃৎপিণ্ড অতি সুগঠিত।

এবার শ্বাসক্রিয়া  বন্ধ করে দিতে হবে  যাতে শ্লেষ্মার মতো 
নাক বা গলা বেয়ে ভালোবাসা না উঠে আসে। অম্লজান
ব্যতীত মরণ নিশ্চিত। মরণ রে তুঁহু মম শ্যাম -সমান।

এ শুধু রবিবারের মনোপলি। আমাকে বাঁচতে হবে কুম্ভক শিখে।
গুরুর সন্ধান চাই, যে গুরু যোগীরাজ।

পর্ণোগ্রাফিক

চমকপ্রদ সব সুর, চমকপ্রদ সব গান হে শশিমুখী তোমাকে মোহিত 
                                                                           করে
এবং আমাকেও, যদিও সময়ের সাপেক্ষে এই মোহবিস্তারের হার
আমার ক্ষেত্রে কিছু বেশি।
তবুও সংযুক্ত রয়েছি , কারণ
একই দ্রব্য দ্বারা আচ্ছন্ন রয়েছি । কোন এক সময় এক বিন্দুতে 
এই মোহবিস্তারের হার এক হলে  তৎক্ষণাৎ ভালোবাসা হত।
কিন্তু ব্যর্থতার কবিতা লিখে এই পরিমাণ সাফল্য পেতাম না , মোহতত্ত্ব
অনায়ত্ত  রয়ে যেত।

যেহেতু চুম্বন করিনি সেহেতু ওষ্ঠের সম্পর্কে এমন লিখতে পারি
যে পড়ামাত্র পাঠকের চুম্বনের ইচ্ছে হবে। এই ভাবে এগোলে
পাঠকের মনে ঢুকে যাবে গোটা হলদে বই। এই হল
আমার সাফল্য যা অপ্রেমজনিত খেদাকটির সাহায্যে নির্মিত।

পাড়ার সিনেমা-হলে , একদিন , আশা রাখি , নুন-শো - এ
আমার কবিতা পড়া হবে।

বিবাহবিচ্ছেদের পরে

বিবাহবিচ্ছেদের পরে সদ্য-পরিত্যাক্ত আদরের জন্য
যে পিপাসা
তার মতো সুন্দর আর কি

সাধারণ ধারণা অনুযায়ী কাম একপ্রকার চাহিদা যা অভ্যাস-জাত
এই চাহিদার কোণও মর্মব্যথা নেই
উকিলের কালো কোটের রয়েছে যেরকম
ধোপাবাড়ি না গিয়ে গিয়ে

কালো কালো কোটগুলিকে দেখেছিলাম আদালতে
ওঁরা যখন নিঃশ্বাসের গন্ধের বিষয়ে প্রশ্ন করেছিল
আমার বেদনার চেয়ে ওই কোটগুলির বেদনা বেশি গন্ধ বয়

আমার বেদনাধারায় ভেসে যাচ্ছে সমাজ সংসার 
উপমাও অতীতের উদ্দেশ্যে ধাবিত হয় স্রোতধারা বেয়ে
বিচিত্র জগতে নদীতীর কি করে
প্রতিটি তরঙ্গে মনে রাখে , সে আমি জেনেছি
তুমিও জেনেছ কি
ভোরে, জেগে ওঠে , যখন সদ্য-পরিত্যাক্ত আদরের জন্য
কেঁদে ওঠে দুটি সাদা গোল স্তন

সামান্য যৌনতা হল সামান্যই
নৈলে স্তন মাংসগ্রন্থী জানি , ক্রন্দন আবেগলিমকার ফেনা, ঝঁজ।

হেরোইন

অনেক দূরে চলে এসেছি
এখান থেকে তোমাদের জায়গাটা অস্পষ্ট লাগছে
মাঝখানে সমুদ্রের মতো এক রাত্তিরের দূরত্ব

সমস্তই , দেখছি  বে-তবিয়েৎ হয়ে আছে
নাটকের নায়িকারা, পরিচালকেরা
মাথার মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ফাঁকা অডিটোরিয়ামের গন্ধ
আমি সড়ক বেয়ে বাইসাইকেল করে চলে যাচ্ছি

তোমাকে খুবই মোহময়ই দেখাচ্ছে
যে কোন গ্রামের ছেলের কাছেই তোমাকে শহুরে মনে হবে
এখান থেকে দূরের শূন্যতাকে পরিপূর্ণ দেখায় যেরকম
কিন্তু , যারা বলে মরুভূমির গল্প খারাপ 
তারা যে সামনের জন্মে উট হবে এতো জানা কথা 

পৌঁছে গেলাম। সাইকেলটিকে দিলাম জিরোতে।
এখানে সাদা ফুলে মাটি সাদা ফুলগাছ সাদা 

খুব শীত এখন এখানে। ফুলের সুসময়।

মনস্তাপ

রোগা একটা মেয়ে একটা বলিষ্ঠ চিঠি লিখেছে

মনোরম সব উপমা , ঝকঝকে সব উৎপ্রেক্ষা
ঘুমভাঙানিয়া প্রেমগান , মর্মান্তিক , মর্মান্তিক!

আমি জানতুম না ভালোবাসা জিনিসটা কী
গরু ঘাস খেতে খেতে  তো জানে না ঘাসকে ঘাস বলে

সারা  পৃথিবীতে এই প্রেম নাই , শুধু এই চিঠি ভরতি ভালোবাসা
চড়ুইভাতি করতে এসে  ভালো লাগে এরকম সিরিয়াসপনা?

কী করে কী সে পেল এই গদ্যের বাচালতা
কী দিয়ে কী খেয়ে এতো জোর পেল সরু কব্জিতে

এ চিঠির উত্তর দেবার ভাষা?
কই ? সে তো শিখিনি বাঙলা ইশকুলে ।

ল্যাবর থিওরি অফ লভ
পুরুষেরা  নারী  জাতির বিষয়ে নিশ্চয় জানে ভালোমতো
নৈলে কেন বা তারা লেখে নারীদের মনচুরি জলকেলি নামে উপন্যাস
নারী কবিরাও যা দু-চার , তারাও হয় পুরুষের বিষয়ে নিয়মিত অভিজ্ঞতা
                                                                              পায়
বা বইপত্র পড়ে লেখে প্রেমের মোচ্ছব

নারীরা তো স্পষ্টতই উচ্চশ্রেণি , নিম্নে রহে রমণ সময়ে
পুরুষের সমস্ত মস্তানি তারা জানে আসলে নিরুপায়
সুতরাং তারা তো লিখবেই কলম ও কালির মাধ্যমে
পুরুষের হীনতা- থিসিস বা তার স্তনদাহ পুং- রোমের লালসায়

আমি নপুংসক বলে এ সমস্ত বুঝতে সুবিধা হয়েছে
প্রতিদিন অন্ন মাগতে যেয়ে বাড়ি বাড়ি , জন্মগান গেয়ে গেয়ে
বুঝে দেখি পুরুষের বাহুর তাবিজ, মেয়েদের মন বুক পাছা
অনুধাবন করে বুঝেছি প্রেমের নাড়ীর কি ধুকধুক

মার্কসবাদের সাহায্যে এক বুঝে নিই ডায়ালেক্টিক , বুঝে নিই
প্রেমে শ্রম লবে কী আকারে , একমাত্র উৎপাদন সম্পর্কে
জানে এ ভুবনে প্রেম কী
তার হেতু তার ব্যবহার তার গগনের ঘনঘটা

কম শ্রমঘন্টা যায় তত্ত্বপূর্ণ প্রেমচিন্তায় , কত ঘণ্টা হাতে থাকে
প্রেমাভ্যাসে তরে ; এই হিসাবের কড়ি সচরাচর বাঘেরা খেয়ে যায়
হয়ো না সতর্ক বা একবগগা  বা ভীরু র‍্যাশনাল 

এ পদ্ধতি ব্যবহার না করলেই দেখবে খাটে শুয়ে অন্য মনচোর।



ঋণঃ'আহির' সাহিত্য পত্রিকা



মন্তব্যসমূহ