অচেনা যাত্রী ১০/পৃষ্ঠাঃ৪

স্মরণঃ গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস

তখন আমরা বৃষ্টির জন্য বসে ছিলাম...

                                                              তমাল বন্দ্যোপাধ্যায়

           আমাদের সেইসব সামাজিক অপেক্ষার ধুত্তোরে আরও একটু বাতাস ছুঁইয়ে দিয়ে যেতে যেতে, বলতে চাওয়া- না চাওয়ার আবহে নতুন ভাষায় বলা শেখাতে শেখাতে কত শতবর্ষ পার হল, কত না মৃত্যুর দিনগুলি পার হল তবু সে চিঠি আর আসে না এখন সামাজিকতার মধ্যে জেগে থাকা বার্তাগুলি রঙিন আলোর মধ্যে ভেসে ভেসে দূর... না চাইলে মুছে  দিতে পারা স্মৃতি নিয়ে, না চাইলে ভুলে যেতে পাড়ার ইচ্ছে নিয়ে বেঁচে থাকা এই আপাত সরল নিঃসঙ্গতার মধ্যেও ভাগ্যিস তিনি ছিলেন ছিলেন বলে আমাদের সামনে এত মার্বেলের রঙ বদলে গেল জানলাম, এত প্রেম নিয়ে, এত পাপ নিয়ে আসলে আমরা বেঁচে থাকতেই তো চেয়েছি এ শহরে মৃত্যুর অন্য পিঠে মুখ লুকিয়ে থাকা বিস্ময়ের সাথে কথা বলতে বলতে জেনেছি, অজাচার এক গোপনতা, যাকে আমরা প্রত্যেকেই লালন করেছি মনে মনে জেনেছি, কল্পনা নয়, আসলে সবই বাস্তব, যাকে আমরা মনে মনে স্বপ্ন বলে ভাবি...
         
তাহলে বাস্তব কই? তাহলে, কল্পনা কাকে বলে? যে শহরের মধ্যে এই লুকিয়ে লালন করা অপরাধবোধ প্রকাশভঙ্গীমা ভুলে আমাদের হাতে দিয়ে গেছে এক দীর্ঘ হাহাকার, যে আমাদের এ ওকে পাগল সন্দেহে চেয়ে থাকা হতাশার মতো জীবনের শেষে অলক্ষ্যে শিখিয়ে গেছে একদিন অবশ্যই এ পালক ঢেকে দেবে সব মলিনতা... তাঁকে কী করে আর কল্পনা মনে হয়! এই কালোমানুষের ঈশ্বর, এই কালোমানুষের গহ্বর, এই নাড়ি শরীরের বিরহস্যীকরণ শেখাতে এসেও তিনি একা যেন জেনে গিয়েছেন পূর্বঘোষিত এক মৃত্যুর দিনলিপি আমাকেই লিখে যেতে হবে... আর সে বাস্তব জুড়ে ফিরে আসছে দারিদ্রের করুণাকমল!

তখন বৃষ্টি আসে সমস্ত শহর ভেসে যায় শরীর জেগে ওঠে মৃত্যু পাশ কাটালে বন্ধু মনে হয় শুধু বৃষ্টি থামে না...     

মন্তব্যসমূহ