বই রিভিউ /@প্রেম/বিষণ্ণরেখার পারে/আয়না/






@প্রেম//শূদ্রক উপাধ্যায়

তরুণ কবি সৈকত ঘোষ এ সময়ের এক উল্লেখযোগ্য কবি। বলিষ্ঠ বাস্তব চেতনা এবং প্রেমের অনুভব কে ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর কাব্য গ্রন্থে। “বিদিশা, বৃষ্টি এঁকো না/ বৃষ্টির মধ্যে গুঁড়ো গুঁড়ো / আগুন থাকে...” অথবা “ তোমার বসন্ত কেমন লাগে/উড়ন্ত জোনাকির ঠোঁটে/ একফালি মেঘের মতো...” লাইনগুলিতে  প্রেমিকার সাথে দারুণ অনুভূতির চিত্র উঠে এসেছে । “কথা ছিল বৃষ্টি হলে ক্যানভাস থেকে তুমি আমার...” আবার বলছেন
“পিরামিডের নিচে রাতের বিছানা পেতো...”। কবি তার ইস্তেহারে বলছেন
“সমস্ত যন্ত্রনা পাশাপাশি এসে বসুক, শান্ত হোক...”।  প্রেমে যন্ত্রণার অনুভূতি  কী  দারুণ ভাবে এঁকেছেন। আবার বলছেন “নিজের আত্মার মধ্যে হাত রাখো/ দেখবে সকলেই পুড়ছে একাকীত্বের আগুনে...” ।    সমস্ত বইটা জুড়ে শুধুই প্রেমের অনুভূতি।কবি নিজেকে কখনো হারিয়ে ফেলেছেন “অদৃশ্য সুখ” খুঁজতে খুঁজতে। মানুষের চরিত্র খুঁজে বেড়িয়েছেন কখনো। তিন প্রকার মানুষের সন্ধান পেয়েছেন অবশেষে। “সূর্যাস্তের আগে / আর একবার ভেসে যাব/ ঝাউবন পেরিয়ে ওই দ্যাখো/ এক টুকরো অন্ধকার...” কি অদ্ভুত অনুভূতি থেকে উঠে আসছে সব লেখা। কবি নিজের অবসর সময় কাটিয়েছেন কখনো বিষণ্ণতায়, দেহহীন কবিতায়। জীবনকে নতুন করে সাজাতে গিয়ে কবি লিখছে “আসলে শেষ থেকে শুরু করব বলে / ঠেলাগাড়ি, খুলে রাখা চাকা...”।  একজন পুরুষের দুঃখ উঠে আসে “পুরুষ, দুঃখের বাগানে দাড়িয়ে...”।  সময়ের সাথে সাথে কবি কখনো যান্ত্রিক হয়ে উঠেছেন আবার কখনো নীরবতায় ম্লান হয়ে থেকেছেন নিজের অজান্তেই “সময়ের সাথে ছুটতে ছুটতে আমরা বড়ো যান্ত্রিক।” অথচ জানালার ও পাশে দুটি চোখ শুধুই প্রেমের ছবি এঁকে যায়।

@প্রেম
সৈকত ঘোষ
প্রথম প্রকাশ জানুয়ারি ২০১৩
অভিযান পাবলিশার্স
দাম- ৭০ টাকা




বিষণ্ণরেখার পারে//শূদ্রক উপাধ্যায়

কবি দেবাশিস মুখোপাধ্যায় শূন্য দশকের একজন উল্লেখ যোগ্য কবি। ব্যক্তিগত জীবনের উপলব্ধি থেকে উঠে এসেছে সমস্ত কবিতা। তার নিজস্ব ভাষাজগৎ, গভীর পর্যবেক্ষন লেখক মহলে বেশ পরিচিতি ঘটিয়েছে। 
কবির চোখে ধরা পড়েছে “একলা চেয়ারের গায়ে সকালের রোদ/ দুটি চোখ স্থির। সোয়েটার বুনছেন মা।” আবার বলছেন “ বাথরুমে জল পড়ছে পুরানো দিনের খালি গানে”। কি নিবিড় দৃশ্য এঁকে চলেছেন কবি। “ বিজ্ঞাপন নেই অথচ সারা ঘর পাখি। / বোনেরা গল্প পড়ে বনের। হাত পাখা নেড়ে।...” আদিমতা কে আমরা কেউ ভুলতে পারিনা। গ্রামীন চিত্রে ধরাপড়ে যৌবনের দৃশ্য “ ফাঁকা কলতলায় গল্প ছড়ানো ফুলশয্যার।/ জল উপচে কলসীর ধারাবাহিক। ”  প্রতিটি কবিতা বিস্ময় জাগায় মনে।
“কিতকিত খেলতে এল শ্রী।শুনলাম কিসকিস। / কিসমতকে পাতায় পুরে টুপুর টাপুর বৃষ্টি।” 
         কবির দারুণ ভাষাজ্ঞান বারবার উঠে এসেছে কবিতায়, শব্দের ব্যবহার, শব্দ নিয়ে খেলা নিপুন হাতে নির্মান করেছেন। “ কল্‌কল্‌করে কালিমা মুছে জেগে উঠেছে কালীমা ...”। কাব্যগ্রন্থের নাম সত্যিই স্বার্থক। কবি অন্ধকারের ভেতর অন্ধকার কেমন হয়  সেটা হয়তো দেখতে পেরেছেন । 


বিষণ্ণরেখার পারে
দেবাশিস মুখোপাধ্যায়  
প্রথম প্রকাশ – জানুয়ারি ২০১২
প্রকাশক- কবিতা ক্যাম্পাস
দাম- ৬০ টাকা    


শ্রীবুদ্ধ পাঠক
আয়না
বাংলা ভাষার চল্লিশজন লেখকের চল্লিশটি অণুগল্প সংকলন। প্রকাশনীর নাম সহ উত্সর্গ পত্র দেখে সহজেই অনুমেয় এটি একটি সংকলন গ্রন্থ ।সম্পাদক বাবুল রায় ।কবি মলয় গোস্বামীর একটি ছোটো ভূমিকা আছে ।এখানে সবকটি লেখাই চল্লিশটি শব্দে ।অমর মিত্র ,জ্যোতি ঘোষ ,কার্তিক নাথ ,মৃন্ময় গোস্বামী ,সুরঞ্জন প্রামাণিক প্রমুখের লেখা আছে ।সব গুলিই কি অণুগল্প নাকি গল্পাণু--তা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে ।  

আয়না
সম্পাদকঃ বাবলু রায়
রণতরী প্রকাশনী
বনগাঁ
কুড়ি টাকা 

মন্তব্যসমূহ