মবিনুল হক
হৃৎকমলে আগুন জ্বেলে
দেউলে টিমটিমে বাতি সারারাত পুড়ে যায় ।
পথের পাথরকুচি দূর থেকে ডাকে আয়
লঘু যে ভ্রমণ মাঠে বারবার ডাকে আয়
জানালার সন্ধ্যাবেলা হাতছানি দেয় আয়
বনস্পতি কেশরাশি দুলে দুলে ডাকে আয়
দোদুল্য বিনুনি ডাকে আয় আয় আয় ।
দোদুল্য বিনুনি ডাকে আয় আয় আয় ।
একা সে হৃদয় পোড়ে কাঁটাতার সীমানায়
আঙিনা দু’ভাগ হয়ে দু’প্রান্তে দু’জনায়
আঙিনা দু’ভাগ হয়ে দু’প্রান্তে দু’জনায়
হৃৎকমলে আগুন জ্বেলে
দিন কাটায় রাত কাটায় ।
দেউলে টিমটিমে বাতি সারারাত পুড়ে যায় ।
অগণতান্ত্রিক
কোথাও থেকে দৌড়ে এসে রাখাল বালক ধরল ঘিরে
গণতন্ত্রের ছেঁড়া ঝান্ডা নাড়িয়ে দিল ভোট-সমীরে
।
বাইরে থেকে হাত বাড়াল দীর্ঘ স্মৃতির
আলোর দিকে বাড়িয়ে দিল চিবুকখানি
সেখান থেকে তাহার মুখের অপ্রস্তুতির
ছায়াঘন মেঘ ছিন্নভিন্ন,
ঝলসে
ওঠে শস্ত্রপানি ।
ইঙ্গিত-সোজা ছিটকে সহসা ছেঁড়া পল্লব অনির্ণেয়
পায়ের ধুলো মাথার উপর অপরিসীম অপ্রমেয় ।
একটি কবিতাঃ
শাহিন লতিফ
মাসুদার রহমান
আমার আস্তিন
গলে বেরিয়ে আসা শালিকেরা
তোমাদের টিনশেডে যতো শালিক আমার আস্তিন গলে
ওরা সব বেরিয়ে পরেছে
তারপর খুঁজে খুঁজে তোমাকে কি পেল
ওরা জানে রোদের বিকেল জুড়ে কে একা বারান্দায়
মুখে কার বিষণ্নতা বিন্দু বিন্দু ঘাম
সেহেতু বাতাসে ওড়ায় ওরা খয়েরি রুমাল
বড় আপার গোলাপ
কর্মে গ্রীলের জানালা
বড় আপা প্রতিটি সন্ধ্যার কাছে গোলাপ ফোটাও
পাঁপড়ি খুলে ঢেলে দাও সেন্টের স্প্রে
তুমি জানো তাতে করে সন্ধ্যাও পথ ভোলে
সন্ধ্যা
রাত্রি যায়
জানো নাকি বালক মাত্র ধ্যানী জানালার গ্রীল
---------------------------------------------------------------------------------------------------------
একটি কবিতাঃ
শাহিন লতিফ
ভালোবেসে জলপরী আমাকে নাও
ও মেঘ ও পরী জলপরী গো কোথা যাও যাও কই
নিয়ে যাও এইসব ধুলো-নোংরা ব্যাধি-ক্লেদ বীজাণুর
হাঁড়ি
নিয়ে যাও ফেলে দাও গৌরীশংকরের পায়ে
সবকিছু শুদ্ধ হোক ঋদ্ধ হোক প্রেমে-পুজো হোক ভেনাসের
মেঘ আর শোনে না আকুতি
মেঘ ভেসে যায় কৈশোরের প্রেমিকারা
যেভাবে আজ টয়োটায় চড়ে ধর্মপতি পাশে ।
আরিফুল ইসলাম
নিষিদ্ধ পল্লীর অনুভূতি
আরিফুল ইসলাম
নিষিদ্ধ পল্লীর অনুভূতি
আমার করাক্কর সিডিউল ।
রাত অথবা সকাল ছুঁই ছুঁই
নিয়মেই শিকল মাঝে মধ্যেই ভেঙ্গে তছনছ করে
ফেলি
সাগরের দেশীয় ঘোড়া আমায় সাঁ সাঁ করে নিয়ে
চলে সেই-
চিরচেনা দেনুয়ার মোড়,ঘুন্টিঘর
অথবা রাত্রিকালিন নিষিদ্ধ কোন পল্লীতে !
নিষিদ্ধ পল্লী বলতে ইদানিং কেন জানি ষ্টেশনের
প্লাটফর্মটাকে মনে হয় ।
মুরুব্বিদের কাছে এটাই তো শুনতাম
তাহলে আমি বলতে গেলে কেন এতো সমালোচনা;
টুকাইগুলো কি তাহলে নিষিদ্ধ কেউ?
ওরা তো নেড়ে কুত্তার মত ওখানেই জীবন কাটিয়ে
দেয়
আমার সমাজ আছে,সম্মান
আছে,
ওদের
কি নেই?
আমি মানব রুপে সমাজে জন্ম নিয়েছি,
সাগর-ও তো তাই!
ওরা কি কুকুর অথবা পাহাড়ি কোন জানোয়ারের
বংশধর ?
দুই জনের জন্য কড়া করে দুইটা রুটি আর ডিম
দাও
আমি মাঝে মধ্যেই বলি আবার অনেক সময় সাগরও
সতীত্বের সংসার আমরা ভালোই নকল করতে জানি
এক মরদের সাথে দুই পতিতার যৌনমিলন ।
এপাশ ওপাশ ভালো করেই পরখ করি
ওদের ধুলোভরা স্তন,নগ্ন
লজ্জাস্থান নিজের চোখে ভেসে আসে
আমার বিবেক আমাকেই ধিক্কার জানায় প্রতি নে
নে
অথচ আমাদের অহেতুক নাস্তা পারতো;
ওদের
লজ্জাস্থান ঢেকে দিতে
পাল্টে দিতে পারতো সমাজের এই সব চিত্র!
মানিক সাহা
গেরস্থালী
শুভঙ্কর রায়
মানিক সাহা
গেরস্থালী
আমার প্রতিদিনের রাজপ্রাসাদ রঙ করার সময় হয়ে যায়
ঘুমের গভীর থেকে জল তুলে এনে
উঠোন ধোয়ার
আয়োজন করে দুষ্টু পাহাড়ি মেঘ।
চকের গুড়োর সাথে রঙ মিশতেই
রঙিন আকাশ হয়ে আমাদের শিশুকাল
হামাগুড়ি দিয়ে কাছে আসে।
সব সময় তাকে ধরা যায়না
অনেক সময় আমরা
খেই হারাই
বিছানায় নদী নামিয়ে ডুবতে থাকি;
ছলাৎকার হামি দেবার নাম করে আসে,চলেও যায়।
আমাদের বিকেলগুলো প্রতিদিন সন্ধ্যা হলে মাঠে গিয়ে বসে,
তার কাছে চাইলেই সিগারেট পাওয়া যায় ।
শুভঙ্কর রায়
স্যাটেলাইটে সিগনাল নেই
স্যাটেলাইটে সিগনাল নেই
জীবনের পথ ঝাপসা
পর্দায় আর কোন রঙ নেই
রিমোটটাও আজ বিকল ।
ছবিগুলো ফ্যাকাসে বা বিবর্ণ ।
এতটুকু
সহনশীলতা নেই ।
শর্মিষ্ঠা মজুমদার
ভালবাসে তোমার অবয়বহীনতা
চোখ দিয়ে অনুভব
মন দিয়ে দেখা
তোমার অবয়বহীনতা
ফেলে আসা কিছু
টুকরো সম্পর্কের জের
কিছু টুকরো স্মৃতি
এক পশলা বৃষ্টি
আর স্মৃতি হয়ে
চোখ দিয়ে নেমে আসে...
তনয় মাইতি
অনেক রাতে
তনয় মাইতি
অনেক রাতে
যখন
অনেক রাতে
,
হঠাত তোমার কথা মনে পরে ,
আধঘুমে -আলসেমি
;
ঢেউ
হয়ে ছুটে আসে সুখ
...
ওই
নির্জনতায় , ওই আবছা আলোয়
চুপচাপ
রাজপথে -
একা
একা আমি আর তুমি
.....
পাশাপাশি শুধু ছায়া দুটি
মিশে
গেছে অবয়বহীনতায়
,
নিস্তব্ধ শব্দেরা ঘিরে
থাকে আমাদের
,
চোখ
দিয়ে শুনি ...তোমার কথা ...
উজ্জ্বল ধ্রুবতারা ,
রয়ে
যায় রাতপ্রহরী ....
অমিত কুমার বিশ্বাস
একদিন
একদিন
গাছে গাছে কবিতা হবে ফুলের মতো
অথবা
পথে পথে নুড়ি-পাথরের মতো
ছড়িয়ে থাকবে কবিতা
থুতু ফেলতেও ইচ্ছে করবেনা তখন
অথবা
টুনির মতো পুজোয় জ্বলবে পথপাশে
অথবা
মাইকে মাইকে শুধুই কবিতা
খিস্তি মারতে গিয়েও
বেড়িয়ে আসবে সুনীল,জয়...
খুন করতে গিয়ে জড়িয়ে ধরে
হাউমাউ করে কেঁদে ফেলবে খুনি
তখন
এভাবে কাঁদবেনা বুড়ো রোদ্দুর ।

------------------------------------------------
'অচেনা যাত্রী' পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।বাকি অংশ পড়ার জন্য অনুগ্রহ করে পরের পাতায় যান ।আপনার মূল্যবান মতামত জানান।আমাদের পরামর্শ দিন । ভালো থাকুন । ভালো রাখুন ।
সৌভিক দে সরকার
ধারা
পথের ঐ সব দৃশ্য
পাগল হয়ে যাবার পর খন্ডিত স্বর
আর ভূতের সওয়ার
পাখিগুলিও উড়ে গেল নির্মিতির দিকে
কৌশল,প্রত্যাহার ও অপেক্ষার দিকে
আমি সাতটি দিকের কথা বলছি
কাচ ও তর্জনীর নির্দেশিত ফলক
একটি আনিয়মিত সঙ্গম দৃশ্য
আমি আরও গভীরতর
একটি তারার কথা বলছি
দূরবর্তী আকাশ,প্রকৃত নক্ষত্র
একজন হন্তারকের ছায়া,জটিল নিমিত্ত
পাগল হয়ে যাবার পর খন্ডিত স্বর
আর ভূতের সওয়ার
পাখিগুলিও উড়ে গেল নির্মিতির দিকে
কৌশল,প্রত্যাহার ও অপেক্ষার দিকে
আমি সাতটি দিকের কথা বলছি
কাচ ও তর্জনীর নির্দেশিত ফলক
একটি আনিয়মিত সঙ্গম দৃশ্য
আমি আরও গভীরতর
একটি তারার কথা বলছি
দূরবর্তী আকাশ,প্রকৃত নক্ষত্র
একজন হন্তারকের ছায়া,জটিল নিমিত্ত
সৌমেন রক্ষিত
আরভ
অথচ শক্তি যে নেই তা নয়
তবু মনে হয়--
অথর্ব,জীর্ণ ঘোমটা
টেনে মৃত্যুকামী
ভালোলাগেনা ফ্যাকাশে আকাশ , নড়বড়ে পালঙ্ক ।
শুরু থেকে শুরু করা একটা উদ্যম
কঠিন হতে থাকে জীবনের অংক
ধাপের পর ধাপ বেয়ে প্রখর অগ্রগামী
লজ্জা নয়,ভয় নয় ,নিরাশ নয়
অবশেষে একদিন ইতিহাস নয়
শম ,যম,নিয়ম,প্রাণায়াম ।
মনোজ দাস
বৃষ্টিখেলা
[মোমো'র কবিতার খাতা
থেকে]
আজ শহরে বৃষ্টি নামলো ঝমঝমিয়ে
ভিজিয়ে দিচ্ছে
ইট কাঠ পাথর
পিচরাস্তা থেকে অলিগলি
পাপী মন শুকনো শরীর ধুলোবালি
ভিজিয়ে দিচ্ছে
চুনখসা দেওয়াল রঙচঙে নতুন পাঁচীল
ভিজিয়ে দিচ্ছে
এ পাড়া ও পাড়ার দলাদলি
ভিজিয়ে দিচ্ছে
লাল-সবুজের প্রতিকী চিহ্নগুলি
ভিজিয়ে দিচ্ছে
তোমার বাংলো বাড়ি
আমার ভাড়ার ঘর
ভিজিয়ে দিচ্ছে
জানলার ছেঁড়া পর্দা
এন্টেনার একলা কাক
শপিং মল থেকে ফুটপথের চায়ের ভাড়
চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাফিক-হাবিলদার
ভিজিয়ে দিচ্ছে
একপায়ে খাড়া ল্যাম্পপোস্টের হলদে আলো
নীরব দুপুর শান্তরাত একলা হল
ছোট্ট মেয়েটির মিষ্টি স্বভাব
বৃষ্টি শরীরে
আদর দিল
আজ শহরে বৃষ্টি নেমেছে ঝমঝমিয়ে
গোপনীয়তা বিক্রি হবে রমরমিয়ে
চলে এসো তুমিও ভিজবে
আমার সাথে
সারা বেলা
অবসরে স্মৃতির ড্রয়ার খুলে দেখ
পেলেও পেতে পারো
ভিজে যাওয়া বৃষ্টিখেলা ।
শুভম
আমার না-লেখা ইচ্ছেরা
যখন সর্ষে খেতের পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে
তোমার আমার সম্পর্কের কথা লিখি তখন
মধুসূদন পুরের পাশ দিয়ে চলে যায়
জুল্কা নদী----
হঠাৎই আমার না-লেখা ইচ্ছেগুলো কাশফুল হয়ে
দাঁড়িয়ে পড়ে নদীর পাড়ে পাড়ে
ওরা তোমার রাইমস্ বইয়ে কী একটা ছড়ার কথা
জিজ্ঞেস করে ।
আর তোমার ড্রইং বই থেকে যত্ত ব্যাঙেরা বেড়িয়ে
আসে ,
আমাকে বকুনি দিয়ে যায় । তুমি কি ব্যাঙেদের
রং নীল করেছিলে কখনো?
এই পৃথিবীর সমস্ত রামধনু মুছে গেলে প্রজাপতিরা
এখানেই ফিরে আসে ,অন্ধকারে তাদের সাথে
নদীর কথা হয়
বাতাসের কথা হয় ।
রাত্রি তার সমস্ত শরীরী পর্দা নামিয়ে দিলে,
নদীও হাঁটতে হাঁটতে চলে যায় সাগরের
কাছে--
পাড়ে ছড়িয়ে থাকে ঝিনুকের কথামালা
এসব মিথ্যে নয় সত্যি । এসব নদীর কাছেই শোনা,
নদী'ই আমায় বলেছে--
তুমি ভেবেছ এসব কেবলই রূপকথা ,ছবি!
প্রতিদিন এই রাস্তায় বেরিয়ে নিরুদ্দেশ হয়
তোমার পরিচিত এক কবি
তোমার আমার সম্পর্কের কথা লিখি তখন
মধুসূদন পুরের পাশ দিয়ে চলে যায়
জুল্কা নদী----
হঠাৎই আমার না-লেখা ইচ্ছেগুলো কাশফুল হয়ে
দাঁড়িয়ে পড়ে নদীর পাড়ে পাড়ে
ওরা তোমার রাইমস্ বইয়ে কী একটা ছড়ার কথা
জিজ্ঞেস করে ।
আর তোমার ড্রইং বই থেকে যত্ত ব্যাঙেরা বেড়িয়ে
আসে ,
আমাকে বকুনি দিয়ে যায় । তুমি কি ব্যাঙেদের
রং নীল করেছিলে কখনো?
এই পৃথিবীর সমস্ত রামধনু মুছে গেলে প্রজাপতিরা
এখানেই ফিরে আসে ,অন্ধকারে তাদের সাথে
নদীর কথা হয়
বাতাসের কথা হয় ।
রাত্রি তার সমস্ত শরীরী পর্দা নামিয়ে দিলে,
নদীও হাঁটতে হাঁটতে চলে যায় সাগরের
কাছে--
পাড়ে ছড়িয়ে থাকে ঝিনুকের কথামালা
এসব মিথ্যে নয় সত্যি । এসব নদীর কাছেই শোনা,
নদী'ই আমায় বলেছে--
তুমি ভেবেছ এসব কেবলই রূপকথা ,ছবি!
প্রতিদিন এই রাস্তায় বেরিয়ে নিরুদ্দেশ হয়
তোমার পরিচিত এক কবি
অমিত কুমার বিশ্বাস
একদিন
একদিন
গাছে গাছে কবিতা হবে ফুলের মতো
অথবা
পথে পথে নুড়ি-পাথরের মতো
ছড়িয়ে থাকবে কবিতা
থুতু ফেলতেও ইচ্ছে করবেনা তখন
অথবা
টুনির মতো পুজোয় জ্বলবে পথপাশে
অথবা
মাইকে মাইকে শুধুই কবিতা
খিস্তি মারতে গিয়েও
বেড়িয়ে আসবে সুনীল,জয়...
খুন করতে গিয়ে জড়িয়ে ধরে
হাউমাউ করে কেঁদে ফেলবে খুনি
তখন
এভাবে কাঁদবেনা বুড়ো রোদ্দুর ।

------------------------------------------------
'অচেনা যাত্রী' পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।বাকি অংশ পড়ার জন্য অনুগ্রহ করে পরের পাতায় যান ।আপনার মূল্যবান মতামত জানান।আমাদের পরামর্শ দিন । ভালো থাকুন । ভালো রাখুন ।
মন্তব্যসমূহ